Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ সোমবার, মে ২০২৫ | ২১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দাপটে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখ্যান প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধার  

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২৮ PM
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা, তাদের দাপটে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন করায় মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন  দেবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের ভুঁইয়া।

গত ১৬ নভেম্বর ডাকযোগে আবেদনটি পাঠিয়েছেন আবুল খায়ের। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ আবেদনের অনুলিপি দেন তিনি। মৃত্যুর পর পারিবারিক ও সামাজিকভাবে দাফন করার অনুরোধ করেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের।

মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের উপজেলা সদরের মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। মুক্তিযুদ্ধে ৬নং সেক্টরের অধীনে একটি কোম্পানির কমান্ডার ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর তার নেতৃত্বে সম্মুখযুদ্ধে হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে দেবীগঞ্জ মুক্ত হয়।

লিখিত আবেদনে মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের বলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলায় ১৬৪ জন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। এর মধ্যে ৪৩ জনই ভুয়া। ২০১২ সাল থেকে এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, দুর্নীতি দমন কমিশন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বহু আন্দোলন সংগ্রামের পর তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের সহযোগিতায় ২০০৯ সালে প্রথম দেবীগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত হয়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তার নেতৃত্বে দেবীগঞ্জ মুক্ত দিবস পালিত হয়। এরপর মূল উদ্যোক্তাকে অবমূল্যায়ন করে নামধারী মুক্তিযোদ্ধারা নামমাত্র অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেবীগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন করছেন।

দুঃখ প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের বলেন, যেখানে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দাপটে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা জিম্মি, সেখানে মৃত্যুর পর একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার দাফন কাফনে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেবেন, এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। তাই মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখ্যান করছি আমি।

তিনি আরও বলেন, ভুয়া হয়েও মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দাপটে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। এজন্য রাষ্ট্রীয় সম্মান না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। আমাকে যেন পারিবারিক ও সামাজিকভাবে দাফন করা হয়।

এ ব্যাপারে দেবীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার স্বদেশ চন্দ্র রায় বলেন, কে কে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, সেটা প্রমাণ করার দায়িত্ব অভিযোগকারীর। যদি ভুয়া কেউ থাকেন, তাহলে তাদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন আবুল খায়ের। কারণ ওই সময় কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আবুল খায়ের ভুঁইয়া নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান চান না জানিয়ে একটি আবেদন করেছেন। তার আবেদনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় নিয়োগ পরীক্ষায় ছেলের চাকরি না হওয়ায় মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিতে মুক্তিযোদ্ধার আপত্তি জানানোর পর এবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গ্রহণে অস্বীকৃতির এটি দ্বিতীয় ঘটনা।  

 

Bootstrap Image Preview