দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন কুষ্টিয়ার খোকসা এলাকার কথিত সাংবাদিক বাদশা খান। এবার নতুন করে আলোচনায় আসলেন এক মোটর গ্যারেজ থেকে নিজ মোটরসাইকেল মেরামত করে টাকা না দিয়ে উল্টো গ্যারেজ মালিককে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলেন কথিত এই সাংবাদিক।
জানা গেছে, উপজেলার অদূরে জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের ভবানীগঞ্জ বাজারে দীর্ঘ ১০ বছর অত্যন্ত সুনামের সাথে মোটর গ্যারেজের কাজ করে আসছেন গ্যারেজ মালিক মনোয়ার হোসেন। সাংবাদিক বাদশা খানের বাড়িও ওই এলাকায়। ওই এলাকায় সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন ভাবে চাঁদা নেয় কথিত এই সাংবাদিক; এমন অভিযোগ এলাকায় সবার মুখে মুখে।
মনোয়ার অটো মোবাইলের পাশের দোকানদার কারসেদ বলেন, বাদশা খান আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে মনোয়ারের গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল সারিয়ে টাকা না দিয়েই চলে যেতে নিলে মনোয়ার টাকা চান। বাদশা খান বলে টাকা কিসের। আমাদের এলাকায় ব্যবসা করো আর আমার কাছে টাকা চাও। এত বড় সাহস। মনোয়ার টাকার জন্য চাপ দিলে বাদশা খান হাতুরি দিয়ে মনোয়ারকে মারতে যায়। এ সময় স্থানীয়রা মনোয়ারকে নিরাপদে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মনোয়ার হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন এখানে ব্যবসা করছি। সবার সাথেই আমার সুসম্পর্ক। বাদশা খান সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমার কাছে মোটরসাইকেল মেরামত করে। কিন্তু ছোটখাটো কাজে টাকা দেয় না। আমিও চাই না। কিন্তু আজ সকালে মোটরসাইকেল সারিয়ে টাকা চাইতে গেলে আমাকে বলে, তোকে ইয়াবা কেসে ফাঁসিয়ে নিউজ করে দিব আর পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেব।
সাংবাদিক বাদশা খান কখনো নিজেকে বিজয় টিভি, কখনো বা ভোরের ডাক আবার কখনো বার্তা টিভির পরিচয় দেন।
এ ব্যাপারে ভোরের ডাকের কুষ্টিয়া জেলার স্টাফ রিপোর্টার মুকুল খসরু বলেন, তাকে নিউজ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার নিউজের মান অনেক খারাপ, অজস্র বানানে ভুল আর নিউজগুলোও পক্ষপাতিত্বমূলক। আর তার বিরুদ্ধে আমার কাছেও কিছু অভিযোগ এসেছে। আমি হেড অফিসকে বলে খুব তাড়াতাড়িই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর খোকসাতে বর্তমানে কাজ করছেন মো. ওবাইদুর রহমান আকাশ নামে এক সাংবাদিক।
এ ব্যাপারে কথিত ওই সাংবাদিক বাদশা খানের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সে ফোন ধরেনি।
খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে যারা কলুষিত করছে তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো উপায় নেই। এ ব্যাপারে আমি খুব দ্রুতই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে খোকসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী জেরিন কান্তা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি ওসি সাহেবের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে খোকসায় কোনো প্রকার অপকর্ম করার সুযোগ নাই।