Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ বুধবার, জুলাই ২০২৫ | ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

খোঁজ নেই বিজেএমসিকে দাওয়া ১০ হাজার কোটি টাকার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:১০ PM
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:১১ PM

bdmorning Image Preview


গত ১০ বছরে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনকে(বিজেএমসি) ১০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন এই টাকা ‘খুঁজে’ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে খোদ অর্থ মন্ত্রণালয়।

এমন সময় অর্থ মন্ত্রণালয় ওই অভিযোগের আঙুল তুলল যখন বিজেএমসি আবারো নতুন করে এক হাজার ১০৩ কোটি টাকা চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে। বিজেএমসি বলেছে, বিজেএমসির শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তাগণের মজুরি বেতন-ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে ১০৩ কোটি টাকা এবং পাটের বকেয়া মূল্য এবং পাটক্রয়ের আবর্তক তহবিল হিসেবে এক হাজার কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন।

গেল সপ্তাহে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বিজেএমসির মিলগুলো উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে একটি জরুরি সভায় উপস্থিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, ইতঃপূর্বে ১০ বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিজেএমসির অনুকূলে প্রদান করা হয়েছে। ইনভেস্ট করার পর মূল টাকা খুঁজে পাওয়া যায় না। মিলগুলোর এ অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দক্ষ লোক, বায়ার, টেকনিক্যাল লোক ইত্যাদি সমন্বয়ে একটি গঠন করা যেতে পারে।

এই আলোচনার শুরুতে গোলাম দস্তগীর গাজী বিজেএমসির করুণ চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বিজেএমসির নিজের পায়ে দাঁড়ানো ও স্বাবলম্বী হওয়ার কথা। অথচ দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বিজেএমসি সে সক্ষমতা অর্জন করতে পারছে না। বেসরকারি মিলগুলো লাভ করছে আর বিজেএমসি লোকসান গুনছে। এ অবস্থা হতে বেরিয়ে আসতে না পারলে বিজেএমসিকে খুব বেশি দিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্যগুলো জানা গেছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাটকলগুলো হতে উৎপাদিত পণ্যের ৮০ ভাগ তারা নিজেরাই ব্যবহার করে। অপর দিকে, আমাদের উৎপাদিত পণ্যের মাত্র ২০ ভাগ আমরা ব্যবহার করি। আমাদের যন্ত্রপাতিগুলো অনেক পুরাতন। এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন। মিল ব্যবস্থাপনায় আরো স্বচ্ছতা আনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ও শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা যাতে বন্ধ না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবে একই সাথে শ্রমিক সংগঠন বা শ্রমিকদের কোনা প্রকার অন্যায় দাবি বা চাপে মিল ম্যানেজমেন্টকে মাথা নত না করার আহবান জানান তিনি।

বৈঠকে মিলগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন-ভাতা মিলের আয় থেকে যথাসাধ্য পরিশোধের জন্য মিলের প্রকল্প প্রধানদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এ ছাড়াও বিজেএমসিকে ক্রমান্বয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা এবং বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য বিজেএমসির চেয়ারম্যানকে ১৫ দিনের মধ্যে মিল ব্যবস্থাপনার সাথে ইতঃপূর্বে জড়িত প্রাক্তন কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনা প্রণয়নে অভিজ্ঞ ব্যক্তি, কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে তাদের নামের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়।

পাটকলগুলোর পাটক্রয় এবং অন্যান্য সব ক্ষেত্রে কোন প্রকার দুর্নীতি বা অনিয়ম যাতে না হয় সে বিষয়ে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ বিষয়ে কোনো প্রকার অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষ্যে জোরালো এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য বিজেএসসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয় বৈঠকে।

Bootstrap Image Preview