চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ডাইনিংয়ে প্রতিনিয়ত অপরিচ্ছন্ন ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা মানসম্পন্ন খাবারের প্রকট অভাব অনুভব করছে।
আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, অনেকটা বাধ্য হয়েই আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্যাম্পাসের আশপাশে বিভিন্ন দোকান থেকে খাবার খাচ্ছে অথবা নিজেদের রান্না করে খেতে হচ্ছে। এতে একদিকে শিক্ষার্থীদের যেমন গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ, অন্যদিকে রান্না করে খাওয়ায় অপচয় হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময়। তবে ছেলেদের হলগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে রান্নার অনুমোদন না থাকায় তাদেরকে বিপাকে পড়েই হলের ডাইনিং অথবা বাইরের খাবার খেতে হয়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, হলের ডাইনিংগুলোতে নিম্নমানের চালের ভাত দেয়া হয়। প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে থাকে প্রায় একই রকম আইটেম। দুপুর ও রাতে একই ধরনের মাছ, মাংস সরবরাহ করা হয়, যার পরিমাণও খুবই অল্প। তাছাড়া হলের ডাইনিং গুলোতে প্রতিদিনের অবিক্রীত খাবারগুলো অন্যদিন খাওয়ানো হচ্ছে।
তাদের মতে, ডাইনিং এর খাবারের মূল্য সাধ্যের মধ্যে থাকলেও খাবারের মান এতই খারাপ যে, অনেক শিক্ষার্থী ডাইনিংয়ের খাবার খেতেই পারে না। তার ওপর ডাইনিংয়ের খাবারে প্রায়ই পোকা, পাথর কিংবা চুল পাওয়ার যায় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। কিছু কিছু হলে তরকারি এক প্রকার সিদ্ধ করে পরিবেশন করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আরিফুর রহমান নামে আমানত হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, হলের ডাইনিংগুলোতে মাছ, মাংস দিয়ে খাবার খেতে যতটা না স্বাদ অনুভব করি তার চেয়ে বাইরের হোটেলগুলোতে শাক- সবজি দিয়ে খাবার খেতে বেশি স্বাদ অনুভব করি। এর কারণ হতে পারে ডাইনিংয়ের বাবুর্চিদের রান্নার অদক্ষতা। পর্যাপ্ত পরিমান তেল, মশলার অভাব ইত্যাদি। এ অভিযোগ আমার একার না আরো অনেকের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ছাত্র বলেন, মাত্র একদিন আগেই শাহজালাল হল ডাইনিং এর খাবার খেতে গিয়ে খাবারে বড় একটা পোকা পাই। বিষয়টি ডাইনিং ম্যানেজারসহ একাধিক কর্মচারীদের জানালে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যায় এবং বলে যে এটা পোকা নয় মরিচ ছিল। তবে ম্যানেজার এসময় ঐ শিক্ষার্থীর মতের বিরোধিতা করে বলেন, এরকম দুই-একটি ঘটনা ঘটতেই পারে।
পরে ঐ ছাত্রের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাহজালাল হলের প্রভোস্ট শাহেদ বিন ছাদিক ম্যানেজারকে ডাকলে তিনি তার ভুল স্বীকার করে। এসময় প্রভোস্ট তাকে খাবারের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে আরো সচেতন হতে বলেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিং এর খাবারের মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অনেকদিন ধরেই সমালোচিত হয়ে আসছে।