বাবার নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিন সন্তান। এ লক্ষ্যে গতকাল শুক্রবার ফরিদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তাসনিম ফারজানা। এ সময় তার দুই ভাই বরকত আল-আজাদ ও রহমত আল-আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পানাইল গ্রামের বাসিন্দা ও খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সিকদার আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মাহমুদা বেগম ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর ওই দম্পতির তিন ছেলে-মেয়ে বরকত, রহমত ও ফারজানা ঝিনাইদহ জেলায় নানাবাড়ির সম্পত্তির মালিক হন। আর সন্তানদের বঞ্চিত করে এই সম্পত্তি গ্রাস করতে উঠেপড়ে লেগেছেন আবুল কালাম আজাদ।
তাসনিম ফারজানা জানান, বাবা আবুল কালাম আজাদ দুই ছেলেকে নিয়ে গত ১৬ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে গিয়ে তিনি দুই ছেলেকে মাদকাসক্ত আখ্যায়িত করে মাগুরা ডিবি পুলিশের সহায়তায় জোর করে গত ১৮ অক্টোবর ফরিদপুরের একটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করান।
এদিকে দুই ভাইয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে ফারজানা ঢাকার ধানমণ্ডি থানায় একটি জিডি করেন। এরপর দুই ভাইকে খুঁজে বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাইকোর্ট গত ৪ নভেম্বর একটি রুল জারি করেন। এ খবর জানতে পেরে আবুল কালাম আজাদ ও তার সঙ্গে থাকা মাগুরা ডিবি পুলিশের পরিচয়ে একদল লোক গত ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ফরিদপুরের লাইফ কেয়ার নামের ওই মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে দুই ভাইকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আবুল কালাম আজাদ একজন অসৎ চরিত্রের লোক। তিনি পারেন না এমন কোনো কাজ নেই। প্রাণ বাঁচাতে আমরা তিন ভাই-বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বরকত আল-আজাদ ও রহমত আল-আজাদ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এদিকে লাইফ কেয়ার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক আশরাফ আলম খান বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ধারী কয়েক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে এসে আবুল কালাম আজাদ তার দুই ছেলে বরকত ও রহমতকে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা হাইকোর্টে রিট আবেদন সম্পর্কে তাদের জানাই। এর পরও তারা দুই ভাইকে জোর করে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাধা দেই।
এ সময় তারা প্রতিষ্ঠানটিতে ভাঙচুর ও আমাদের মারধর করেন। একপর্যায়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সাহায্য চাইলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে দুই ভাই আমাদের হেফাজতে রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তাদের আদালতে হাজির করতে প্রস্তুত রয়েছি।