জমি লিখে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে তার বৃদ্ধ বাবাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। ডান হাতে সেলাই নিয়ে শয্যাসায়ী ওই বৃদ্ধ বাবা ও ছেলের ফের হুমকিতে ঘরবন্দি রয়েছেন মা। গত চারদিন আগে এ ঘটনা ঘটলেও আইনি সহায়তার জন্য বৃদ্ধ বাবা-মা থানায় যেতে পারছেন না। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশলী ইউনিয়নেসর লতিফপুর গ্রামে।
তবে অভিযুক্ত ছেলে বলছেন, তার বাবা ছোট ভাইকে সকল সম্পত্তি লিখে দেওয়ার প্রতিবাদ করলে তাকে (ছেলে) মারতে উদ্যত হলে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। তিনি মারধর করেননি।
আহতের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, গত ছয়মাস আগে তার বড় ছেলে তরিকুল ইসলাম জমির অংশ লিখে দিতে হুমকি দেয়। দিতে না চাইলে তাকে ও স্বামীকে মারধর করে। পরে তিনি ভয়ে পাশের ইন্দারগাতি গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। এ ঘটনায় তার স্বামী ওই সময় থানায় অভিযোগ দেন। পুলিশ বাড়িতে এসেছিল। কিন্তু সন্তান তাদের কাছে ক্ষমা চাইলে পরে আর থানা-পুলিশ করতে চাননি।
রোকেয়া বলেন, গ্রামের একটি মহল তার বড় ছেলে তরিকুলকে উসকে দিচ্ছে বাবার কাছ থেকে তার (ছেলে) ভাগের জমি লিখে নেওয়ার জন্য। কিন্তু লিখে দিলে ওই স্বার্থান্বেষী মহলটির কাছে জমি বেহাত হতে পারে। এই আশঙ্কা করে তার স্বামী ছেলেকে জমি লিখে দেয়নি। এটাই বাবা আবদুল জব্বারের অপরাধ। এ কারণে তরিকুল তাদের দুজনকে মারধর করে। ঘরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়।
বাবা আবদুল জব্বার বলেন, গত সোমবার তিনি বাড়ির সামনে গাছের পাতা জমা করতে থাকেন। এ সময় ছেলে তরিকুল তার কাছে গিয়ে ফের জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এতে তিনি কোনো কথা না বলে বাড়ির ভিতর চলে যেতে চাইলে তরিকুল পিছন দিক থেকে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আগাত করে। এ সময় প্রতিহত করতে চাইলে ডান হাতে আগাতে রক্ত বের হয়। পরে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে গেলে সেখানের চিকিৎসক একটি সেলাই করে সদরে হাসপাতালে যেতে পরামর্শ দেন।
তিনি আরো বলেন, নিজের নিরাপত্তার কারণে তিনি না গিয়ে বাড়িতেই আছেন।
আবদুল জব্বারের বড় মেয়ে তাহমিনা আক্তার বলেন, আব্বা রফিুকুলকে তার ভাগের চাইতেও বেশি জমি লিখে দিয়েছে। নিজেকে বঞ্চিত মনে করে বড় ভাই তরিকুল ইসলাম ক্ষুদ্ধ হয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।
আবদুল জবারের ছোট ছেলে রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাবার আশঙ্কায় তার বাবা তার নামে কিছু জমি লিখে দিয়েছেন। এই অবস্থায় তিনি (বাবা) যদি ফেরত চান সেই জমি ফেরত দিয়ে দেবেন। কিন্তু এ কারণে তার বড় ভাই তার বাবা-মায়ের সাথে এ ধরনের আচরণ করতে পারে না। তিনি মনে করেন কেউ তাকে উসকানি দিয়ে এসব করাচ্ছে।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি মনসুর আহাম্মাদ বলেন, ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আইনি সহায়তা চাইলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।