চলাফেরায় ব্যাপক ঠাঁটবাট আশরাফুল ইসলামের। বিশেষ বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে কখনো নিজের নাম বলতেন আর্মি সুমন, কখনো সুমন হাসান, আবার কখনো সুমন মোল্যা। আর এসব পরিচয়ের বিশ্বস্ততা প্রমাণে জোগাড় করেছেন সেনাবাহিনীর একাধিক ভুয়া পরিচয়পত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র। সেই সঙ্গে মাঝে মধ্যেই মাথায় সেনাবাহিনীর টুপি, গায়ে বাহিনীর নেমপ্লেটযুক্ত জ্যাকেট ও সোয়েটার জড়িয়ে ঘুরে বেড়াতেন। তার মূল টার্গেট থাকত নারী। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব, তার পর প্রেমের সম্পর্কে জড়াতেন। সুযোগ বুঝে তাদের ধর্ষণ করে তা ভিডিও করে রাখতেন। এর পর ফাঁদে ফেলে বা ভয়-ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিতেন অর্থ।
এভাবেই কথিত সুমন হয়ে ওঠেন ‘সিরিয়াল ধর্ষক’। তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারানো যশোরের বাঘারপাড়ায় এক নারীর মামলার তদন্তে নেমে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এর পর স্বীকারোক্তিতে আশরাফুল নিজেই জানিয়েছেন, ১৯ নারীর সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে ‘স্বেচ্ছায়’ ও জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। গোপন ক্যামেরায় এসব দৃশ্য ধারণও করেছেন, যা মেমোরি কার্ডে সংরক্ষিত। তবে তদন্ত না করে সেসব তথ্য প্রকাশ করতে চায় না পুলিশ।
অভিযান শেষে দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, আশরাফুল ওরফে সুমনের বিরুদ্ধে নড়াইল, রাজশাহী, যশোর কোতোয়ালি ও বাঘারপাড়া থানায় প্রতারণা ও ধর্ষণের চারটি মামলা রয়েছে।
এ ছাড়াও অভিযান পরিচালনাকালে তার কাছ থেকে সেনাবাহিনীর চারটি ভুয়া আইডি কার্ড, তিনটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, সেনাবাহিনীর একটি ব্যাগ, একটি ক্যাপ (টুপি), সেনাবাহিনীর নেমপ্লেটযুক্ত জ্যাকেট ও সোয়েটার, দুটি মোবাইল ফোন, একটি মেমোরি কার্ড (ধর্ষণের ভিডিওসহ) এবং ১৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয় হয়েছে।