বিএনপিকে ‘ষড়যন্ত্রের উস্তাদ’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘তারা (বিএনপি) আর কিছু না পারুক যড়যন্ত্র করতে পারে। দেখুন একেকটা ঘটনা ঘটে, আর তারা তার ওপরে ভর করে ইস্যু খুঁজে।’
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যলায়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ভর করছে, সেটা মাঠে মারা গেছে। তারপরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভর করছে, সেটাও মাঠে মারা গেছে। আবরার হত্যাকাণ্ডের কথা বলছে, যেখানে তারা সনি হত্যাকাণ্ডের মামলা পর্যন্ত করতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে একটি অপকর্মেরও সাজা হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। মির্জা ফখরুল বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু তারা একটি অপকর্মের শাস্তি দিতে পারেনি। শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে। অপকর্ম করলে শাস্তি পেতেই হবে। আওয়ামী লীগ বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নুসরাত হত্যাকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মির্জা ফখরুল আবোল-তাবোল বকেছেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের লোক যে সাজা পেল তার প্রশংসা করছেন না। সবকিছুতেই তারা নেতিবাচক রাজনীতি খুঁজে।’
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস-লুটপাটের দল নয় দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, টেন্ডারবাজ তাদের আওয়ামী লীগে দরকার নেই। খারাপ লোকজন আমাদের প্রয়োজন নেই।
কিছু লোক নিরীহ মানুষের ওপরে নির্যাতন করে, তারা অভিযোগও দিতে পারে না। নির্বাচন এলে ব্যালটের মাধ্যমে এরা শাস্তি দিয়ে দিবে। যারা মাস্তান তারাই অনুপ্রবেশকারী। যাদের ভোগের ইচ্ছে আছে তাদের দরকার নেই। শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করেন।’
আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় থাকার পার্টি নয় জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখেনি, বরং জনগণের ইচ্ছায় আমরা ক্ষমতায় রয়েছি। জনগণের চাহিদার বাহিরে ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছে আমাদের নেই। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ। তাই এই শক্তিকে পক্ষে রাখতে হবে।
উন্নয়নের সাথে আচরণ ভাল না হলে এই উন্নয়নের কোনও লাভ নেই। জনগণ বিএনপির সাথে নেই। নেতিবাচক রাজনীতির কারণে বিএনপি জনগণের সাড়াও পাচ্ছে না। এজন্যই তারা কোনও কর্মসূচিতে সমর্থন পায় না।’
ক্ষমতাসীন জোটের অনেকেই উল্টাপাল্টা কথা বলছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন,
‘সরকারের অস্তিত্বকে দুর্বল ভাববেন না। নৈতিক ও সততার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ সরকার দাঁড়িয়ে আছে।’
আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রসঙ্গে দলটি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে হবে নতুন কমিটি। নতুন মুখ আসবে। এক্সপেরিয়েন্স ও এনার্জির সমন্বয় হবে। সরকারের সহযোগিতার জন্য শক্তিশালী দল দরকার। দল দুর্বল হয়ে গেলে সরকারও দুর্বল হয়ে পড়বে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণকে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া আহ্বানও জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। তবে তাকে কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্ততি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল গুহ, সদস্য সচিব গাজী মেসবাউল হক সাচ্চু। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি দায়িত্ব পালন করবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।