Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ শনিবার, জুলাই ২০২৫ | ২১ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাটি ফেটে পানির ফোয়ারা, অলৌকিক ভেবে বোতলে ভরছে মানুষ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:১৯ PM
আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:১৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


নওগাঁর মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নে ইটাখৈর গ্রামে একটি কলাবাগানের মধ্য থেকে মাটি ফেটে অনবরত পানি বের হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এভাবে পানি বের হওয়ায় স্থানীয়রা অলৌকিক বলে দাবি করছেন। আশপাশ থেকে মানুষ ঘটনাস্থলটি দেখার জন্য ছুটে আসছেন। আবার কেউ কেউ পানি বের হওয়াকে অলৌকিক ভেবে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করছেন।

এমনটিই জানিয়েছেন কলাবাগানের মালিক মান্দা উপজেলার ৬ নং মৈমন ইউনিয়নের ইটাখৈর গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে ইদ্রিস আলী।

এদিকে স্থানীয়রা এ ঘটনাকে অলৌকিক বলে মনে করছেন। তারা এটাকে পবিত্র পানি হিসেবে কন্টেইনার বা বোতলে সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। মান্দা উপজেলার ৬ নং মৈমন ইউনিয়নের ইটাখৈর গ্রামের একটি কলাবাগানে গত রবিবার সকাল থেকে আকস্মিকভাবে একটি ছোট টিলার গা ফেটে পানি বের হওয়া দেখতে পান স্থানীয় এক মহিলা।

স্থানীয় জাহিদ হাসান এবং কালাম জানান,গত রবিবার সকালে স্থানীয় এক মহিলা জলছত্র-পাঁজরভাঙ্গা রোডের জলছত্র মোড়ের প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে মৈনম ইউপি’র ইটাখৈর গ্রামের মৃত এরশাদ আলীর ছেলে ইদ্রিস আলীর কলাবাগানে পাতা কাটতে এসে দেখেন যে একটি কলা গাছের কোল ঘেঁষে একটি জায়গা থেকে মাটি ফেটে পানি বের হচ্ছে। সেই সাথে বিকট শব্দ হচ্ছে। এ খবর আশপাশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতারা কৌতুহল নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। তাদের সকলের কাছে একটিই প্রশ্ন! ঘটনা কি, আসলেই সত্য কি- না? ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একটাবারের জন্য না গেলে মিস করবেন বলেও আহব্বান জানানো হচ্ছে।

এ ঘটনাকে স্থানীয় মানুষ সৃষ্টিকর্তার আর্শীবাদ হিসেবেই ধরে নিয়েছে। আবার অনেকেই বলছেন এটি এক অলৌকিক ঘটনা। ইতিমধ্যেই অনেকেই এ পানি বোতলে ভরে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন। সুপেয় হওয়ায় তা পান করছেন অনেকে।

একই গ্রামের পাশর্^বর্তী জমির ইসমাইল হেসেনের ছেলে মালিক শামসুর রহমান বলেন,গত ৫/৬ দিন যাবৎ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত মানুষ ভিড় করছে। বেশিরভাগ মানুষ হাতে বোতল নিয়ে অপেক্ষা করছেন পানি সংগ্রহ করার জন্য। কে কোন নিয়তে পানিগুলো বোতলে ভরে নিয়ে যাচ্ছে, সেটি আমি কিছু বলতে পারবো না।

স্থানীয়দের আরো কয়েকজন জানান, আশেপাশের ২/৪ কিলোমিটারের মধ্যে নদী, খাড়ির মতো কোনো স্থানীয় পানির উৎস নেই ওই এলাকায়। গত এক সপ্তাহ এ এলাকায় কোনো ভারী বৃষ্টিপাত হয় নি। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমেও আশপাশের এলাকায় পানির অভাবে তেমন ধান চাষ হয়না। বেশির ভাগ জমি ভিটা মাটি। যে স্থানে এ ঘটনা ঘটেছে তার আশেপাশে গভীর নলকূপ বোরিং করা যায়নি। এ অঞ্চলে পানির স্তর ৮০ থেকে ১২০ ফিটের মধ্যে।

অনেকে জানান, সাধারণত যদি বায়ুর চাপ পানির চাপের চেয়ে কম হয় তাহলে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। জানামতে এ ধরনের ঘটনা প্রথিবীর অন্য দেশগুলোতে ঘটলেও সাধারণত বাংলাদেশে ঘটে না। বায়ুর চাপ যদি পানির চাপের থেকে কমে যায় তাহলে ভূ-গর্ভস্থ পানি বের হয়ে আসতে থাকে।

যতক্ষণ পর্যন্ত বায়ুর চাপ পানির চাপের চেয়ে বেশি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মাটির নিচ থেকে পানি বের হবে। অত্র এলাকায় এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম বলেও বলে জানান স্থানীয় সচেতনরা।

সরেজমিন গিয়ে কয়েকজন উৎসুক জনতার সাথে কথা হয়, তারা অনেকে জানান, এমন খবর শোনার পর কেউ কেউ ঘটনাস্থলে এসেছেন দেখার জন্য। আবার কেউবা এসেছেন পানি নিতে।তাদের মধ্যে স্কুল ছাত্র ইমরা কে ওই সাথান থেকে বোতলে পানি তুলে দিতে দেখা গেছে। আর স্থানীয় আব্দুল গৃহবধু ফাতেমাতুজ্জহুরা,রাখি ইসলাম পাখি,নূরজাহানসহ অনেকে।

এছাড়াও স্থানীয় কিছু লোকজনকে বিভিন্ন অসুস্থতার জন্য পানি নিতে আসা অনেকের সাথে কথা হয়েছে তারা হলেন,দেলোয়ারা,এজিনা এবং নওগাঁ সদরের বলিহার ইউপির বলিহার গ্রাম থেকে আগত স্কুল ছাত্র সৌরভ জানান তিনি তার মায়ের জন্য বোতলে পানি নিতে এসেছেন। তারা সকলে অন্ধ বিশ্বাসে এসব পানি পান করছেন এই বলে যে, এই পানি পান করলে তাতের সকল অসুখ বিসুখ ভালো হয়ে যাবে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বলেন বিষয়টি আমি অবগত নয়। তবে স্থানীয় ইউ’পি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Bootstrap Image Preview