Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ রবিবার, জুলাই ২০২৫ | ২২ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

গণমাধ্যম ছাড়া বৈঠকে রাজি নয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০২:১২ PM
আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০২:১২ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে গণমাধ্যম ছাড়া বৈঠকে না বসার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে এই বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা চলছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকালে বৈঠকে বসবেন বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম। বৈঠকে আন্দালনকারীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

বিকাল ৫টায় বুয়েট ক্যাম্পাস মিলনায়তনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আজ সকালে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভিসির ব্যক্তিগত সচিব গতকাল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বুয়েট প্রশাসন তাদের দাবিগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের দাবি পূরণে প্রশাসন আন্তরিক নয় বলেও তারা সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গত রোববার রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগ নেতারা নির্মম নির্যাতনে হত্যা করে। এরপর থেকেই বুয়েটের পাশাপাশি সারা দেশের ছাত্রসমাজ ফুঁসে ওঠে।

জানা গেছে, গতকাল দিনভর এ বৈঠক নিয়ে ভিসির ব্যক্তিগত কর্মকর্তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দর কষাকষি চলে। শেষ পর্যন্ত গণমাধ্যম ছাড়া মিটিংয়ে অংশ নিতে রাজি হয়নি শিক্ষার্থীরা। এছাড়া, আন্দোলনে সমর্থন দেয়া শিক্ষক সমিতির নেতাদের বৈঠকে ডাকা হয়নি।

এদিকে, শুক্রবার দুপুরের মধ্যে দেখা না দিলে এবং ১০ দফা দাবির কয়েকটির বিষয়ে বিকালের মধ্যে আশ্বস্ত না করলে বুয়েটের সব ভবনে তালা দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই হুমকির মুখে অবশেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বুয়েট উপাচার্য আলোচনায় বসছেন বলে জানা গেছে।

বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ইস্যুটা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়। এটার বিষয়ে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে,বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ আমাদের ভাই। তার মরদেহকে পুঁজি করে বহিরাগত কেউ নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবেন না।

শুক্রবার সকাল সোয়া ১১টায় বুয়েট শহীদ মিনার চত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মাহমুদুর রহমান সায়েম সবার উদ্দেশে এ অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনার সময় শুধু বর্তমান ছাত্রদের পরিচয়পত্র দেখে অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। কথা বলার সময়, টেলিভিশন চ্যানেল, দৈনিক পত্রিকা ও বহুল প্রচারিত অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারবেন। কোনো অপ্রচলিত ও ব্যক্তিগত মিডিয়াসহ অন্য কাউকে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। একটি মিডিয়া থেকে সর্বোচ্চ দুইজন প্রবেশ করতে পারবেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে সায়েম বলেন, উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনার সময় মিডিয়ার কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না। কোনো টেলিভিশন চ্যানেল লাইভ টেলিকাস্ট করতে পারবে না। তবে, আলোচনা শেষে প্রচারের জন্য ছবি ও প্রয়োজনীয় ভিডিও নিতে পারবেন।

উপাচার্যকে দেওয়া আল্টিমেটামের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু উপাচার্য স্যার আমাদের সঙ্গে বিকেল ৫টার সময় কথা বলার জন্য রাজি হয়েছেন। তাই, স্যারের সঙ্গে আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আল্টিমেটামের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এসময় আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলা হয়, শুক্রবার আমরা মিছিলসহ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করবো। এরপর প্রতিদিনের মতো বুয়েট সংলগ্ন শহীদ মিনার চত্বর সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। এরপর সেখানে একটি পথনাটকের প্রদর্শন হবে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি কর্মসূচি পালন করা হবে। জুমার নামাজের পরে বুয়েট ডিবেটিং ক্লাবের আয়োজনে একটি প্রতীকী কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর সবাই একসঙ্গে অডিটোরিয়াম কমপ্লেক্সে উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনায় যাবো।

রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফাহাদকে শেরে-ই-বাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল।

আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) বিভাগের লেভেল-২ এর টার্ম ১ এর ছাত্র ছিলেন। তিনি শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।

Bootstrap Image Preview