Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ রবিবার, জুলাই ২০২৫ | ২২ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বুয়েট উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক বিকেলে, যা বললেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০১:০৮ PM
আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০১:০৮ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সব ভবনে তালা লাগিয়ে দেওয়ার হুমিকর পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়াম হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব কামরুল হাসান। তবে এ বিষয়ে আজ সকালে বুয়েট ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।  

আবরার হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার ছুটির দিনেও বুয়েট ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছে বিক্ষোভকারীরা। বুয়েট থেকে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা, আবরার ফাহাদের খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গণমাধ্যমের উপস্থিতিতেই কেবল বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেবেন।  

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘জুমার নামাজের পর অডিটরিয়ামে ঢোকা শুরু হওয়ার পর বিকেল ৫টার সময় ভিসি স্যার আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন। তখন আমরা উনার সঙ্গে কথা বলা শুরু করব।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমের জন্য কিছু নির্দেশনার কথা বলেন। আন্দোলনরত আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘মিডিয়ার ভাইদের জন্য আরেকটা ইনস্ট্রাকশন হচ্ছে-আমরা কোনো একটা সিঙ্গেল মিডিয়া থেকে সর্বোচ্চ দুজনকে অ্যালাউ করব। প্রোপার আইডেন্টিফিকেশনের মাধ্যমে ঢোকানো হবে, যাতে কোনো ফলস মিডিয়া ভেতরে ঢুকতে না পারে।’

গণমাধ্যম কর্মীদের অডিটরিয়ামে ঢোকানোর সময় গেটে চেকিং করার বিষয়টিকে সম্মানহানী হিসেবে না নেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দয়া করে আমাদের সহযোগিতা করবেন এবং আপনাদের প্রোপার পরিচয়পত্র আমাদের দেখাবেন।’

সেইসঙ্গে আবরার ফাহাদের লাশকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা না করারও আহ্বান জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া সংলাপ চলাকালে সরাসরি সম্প্রচার ও প্রশ্ন না করারও অনুরোধ জানানো হয় গণমাধ্যম কর্মীদের।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বুয়েট শহীদ মিনারের অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম দেন, শুক্রবার বেলা ২টার মধ্যে উপাচার্য যদি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত হয়ে তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা না দেন, তা হলে শনিবার থেকে প্রতিষ্ঠানটির সব ভবনে তালা লাগিয়ে দেওয়া হবে।

তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা দাবির মধ্যে ভিসি স্যারের জবাবদিহির বিষয়টি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সব প্রশ্নের জবাব দিতে শুক্রবার বিকেল ৫টায় তাদের সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বুয়েটের একজন শিক্ষকের মাধ্যমে এ প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।’

এর আগে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ৪৮ ঘণ্টা পর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এ সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার শুরুর দিকে নীতিগতভাবে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান সাইফুল ইসলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানালে অপারগতা প্রকাশ করেন উপাচার্য। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শুরু করেন।

উপাচার্য ক্যাম্পাসে আসার পর শিক্ষার্থীরা জানতে চান, দুদিন ধরে তিনি কোথায় ছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো জবাব না দিয়ে সরাসরি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। মাইক দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আবরারের মৃত্যু হয়েছে।’

উপাচার্যের এমন মন্তব্য শুনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন। পরে তারা আবরারের মৃত্যু নয় তার খুন হয়েছে বলে চিৎকার শুরু করলে উপাচার্য বলেন, ‘ঠিক আছে খুনই হয়েছে।’

গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ১০ আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপসমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান ও মেহেদী হাসান রবিন।

মামলাটিতে গতকাল বুধবার আরও তিন আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন ও সাসছুল আরেফিন রাফাত।

Bootstrap Image Preview