ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
সকাল ১০টা ১৫ মিনটে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আফজালুর রহমান।
আফজালুর রহমান বলেন, ‘সম্রাটের পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে ৩ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল টিমের পর্যবেক্ষণে সম্রাটের চিকিৎসা চলছে।’
এর আগে বুকে ব্যথা অনুভব করলে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা সম্রাটকে কারাগার থেকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ঢামেক চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
এ দিকে, যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি সম্রাট অসুস্থ হওয়ার সংবাদে হাসপাতালে দেখা করতে এসেছেন তার আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ পারভীন।
সোমবার (০৭ অক্টোবর) রাতে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনের আলাদা দুই মামলায় দশ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। এই রিমান্ড শুনানি আগামীকাল বুধবার (০৯ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।
রমনা থানা পুলিশ অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলায় ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার দেখানো-পূর্বক ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম ইয়াসমিন আরা আসামি সম্রাটের উপস্থিতিতে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন ও রিমান্ড শুনানির জন্য বুধবার দিন নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, রবিবার (৬ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী আরমানকেও গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাদের যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকার জুয়াড়িদের কাছে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। জুয়া খেলাই তার পেশা ও নেশা। প্রতি মাসে ঢাকার বাইরেও যেতেন জুয়া খেলতে।
যুবলীগ নেতাদের আটকের পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে রবিবার দিনভর রাজধানীতে সম্রাট ও আরমানের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব।
এছাড়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পেয়ে আটকের সময়ই সম্রাটের সহযোগী আরমানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর কাকরাইলের অফিসে বন্যপ্রাণীর চামড়া সংরক্ষণের দায়ে সম্রাটকেও একই মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। আর তার সহযোগী আরমানের জায়গা হয় কুমিল্লা কারাগারে।