Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ বৃহস্পতিবার, জুন ২০২৫ | ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

এমপির বাড়ির পেছনের বাসিন্দা আবরারের পরিবার আওয়ামী লীগ সমর্থক!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:২৯ PM
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:২৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদের পরিবার নিজেদের আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে দাবি করেছে।

নিহত আবরার ফাহাদ কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ির পেছনের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্র্যাককর্মী বরকত উল্লাহ-রোকেয়া দম্পতির বড় ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, আবরার ফাহাদ ২০১৫ সালে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন ‘এ’ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন ঢাকা নটরডেম কলেজে। সেখান থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও গোল্ডেন ‘এ’ প্লাসসহ উত্তীর্ণ হন। পরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। ফাহাদ সেখানে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।

আকস্মিক এই হৃদয়বিদারক ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের স্বজনরা। ফাহাদের ভাই ঢাকা কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র আবরার ফায়াজ জানান, যারা এই হত্যা ঘটিয়েছে তারাই অপপ্রচার চালাচ্ছেন ফাহাদ ছাত্রশিবির করত। প্রকৃতপক্ষে ফাহাদ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত কিন্তু রাজনৈতিক কোনো সংগঠনে জড়িত নয়।

শোকার্ত আহাজারি করে ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ফাহাদ ছুটিতে বাড়িতে এসে ১০ দিন ছিল। ২০ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তাই রবিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

তিনি বলেন, কে বা কারা কী কারণে ছেলে ফাহাদকে নৃংসশভাবে হত্যা করেছে তার কিছু জানেন না।

যারা এ হত্যায় জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।

রোকেয়া খাতুন আরো বলেন, আবরার ফাহাদের কোনো শত্রু ছিল না। সে কোনো রাজনৈতিক দল বা শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তবে তাবলীগে জড়িত ছিল। আমাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের সমর্থক। 

জানা যায়, ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখলী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে ফাহাদের পরিবারের সবাই পরিচিত। একসময় তারা কৃষি কাজে যুক্ত ছিল। পরে তাদের পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেন। কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়ার সূত্রে বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া শহরের বসবাস শুরু করে

ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক স্বপন বলেন, ফাহাদ লেখাপড়ায় বরাবরই ভালো ছিলো। ওকে কোনোদিন কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে দেখিনি। কুষ্টিয়া থেকে এসএসসি পাশ করার পর ঢাকায় চলে যায়।

আবরারের চাচা মিজানুর রহমান বলেন, ‘সে (আবরার) শিবিরের কর্মী, এমন কথা রটাচ্ছে সবাই। এটা বানোয়াট, আমরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক। হানিফ সাহেবের বিভিন্ন মিটিংয়েও আমরা যাই। আবরার এমনিতে তাবলিগে যেত। বুয়েটে ভর্তির পর দুই-তিনবার সে তাবলিগে গিয়েছিল।’

রোববার রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 

জানা যায়, রাতে বুয়েটের শের-ই বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। পরে দিবাগত রাত তিনটার দিকে হল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

মারা যাওয়া আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।

Bootstrap Image Preview