ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সদ্য বহিস্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে আটক করা হয়। এ সময় তার অন্যতম সহযোগী আরমানকেও আটক করা হয়।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন সম্রাট। এজন্য সম্রাট ভারতের সীমান্ত কাছাকাছি তার গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ভারতে যাওয়ার জন্য সীমান্তের পাচারকারী একটি চক্রকে পারাপারের ব্যবস্থা করার দায়িত্বও দিয়েছিলেন। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
ক্যাসিনো সম্রাটের গ্রামের বাড়ি পরশুরাম থানার মীর্জানগর ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে। তবে ওই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকায় সীমান্ত অতিক্রম করা দুরূহ ছিলো। চৌদ্দগ্রামের যে বাড়িতে সম্রাট আত্মগোপনে ছিলেন সেই গ্রামও ভারত সীমান্তের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে।। তবে সীমান্তে বেড়ার জন্য পরশুরামের বিলোনিয়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
আর একদিন মাত্র সময় পেলে তিনি ফেনীর বিলোনিয়া এলাকা দিয়ে ভারতে পাড়ি জমাতেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, গ্রামটি ভারত সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে। গ্রামে সম্রাটের বাড়িটি সারাবছর খালি পড়ে থাকে। গ্রেপ্তারের আগে হঠাৎ করে সম্রাটের বাড়িটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। বাড়িতে কিছু যুবকের আনাগোনাও দেখা গেছে। এরা মূলত পাহারার কাজ করছিলো। এলাকায় সম্রাটের সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে।
পরশুরামের স্থানীয় লোকজন জানায়, সম্রাট এলাকায় যুবলীগের একটি অংশকে পুষতেন। রোববার সকালে সম্রাটের গ্রেপ্তারের খবর এলে তার সমর্থকরা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হতে থাকে।
পরশুরামের মীর্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টো জানান, ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ সকাল থেকে সম্রাটের পক্ষে তৎপর ছিল। তবে যুবলীগ থেকে সম্রাটকে বহিষ্কার করার ঘোষণার পর তারা সটকে পড়ে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। গ্রেপ্তারের আগের রাতে তার বাসাটি ঘেরাও করে ফেলা হয়। রোববার রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর সম্রাটকে ঢাকায় নিয়ে এসে তার কাকরাইল অফিস ও দুই বাসায় একযোগে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এসময় কাকরাইলের কার্যালয় ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা, বিদেশি পিস্তল, গুলি ও ক্যাঙারুর চামড়া উদ্ধার করে র্যাব।
একই সময় সম্রাটের ভাইয়ের শান্তিনগরের বাসা ও সম্রাটের মহাখালীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। তবে সেখান কী পাওয়া গেছে তা জানায়নি র্যাব।
তবে তার কার্যালয়ে পশুর চামড়া রাখার দায়ে তাকে ৬ মাসের জেল দিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। বর্তমানে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন সম্রাট।