রোহিঙ্গা আগমনে প্রভাবিত কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি সহায়তার উদ্যোগ গ্রহন করেছে ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘ শরনার্থী সংস্থা।
বুধবার (২ অক্টোবর) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক জনাব মো: কামাল হোসেন এর উপস্থিতিতে উক্ত কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
উক্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টেকনাফ এর হোয়াইক্যং এ অবস্থিত কাঞ্জরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও হ্নীলার নাইক্ষ্যংখালি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুটি সেমিপাকা ভবন ও ওয়াস ব্লক নির্মাণ করা হয়েছে, উক্ত স্কুল গুলোতে যথাক্রমে ৬৫০ ও ৩৭০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহন করছে। উক্ত বিদ্যালয় দুইটি ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের পরবর্তী সময়ে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
এছাড়াও টেকনাফের নয়াপাড়া ও জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যম্পের পার্শবর্তী এলাকায় বসবাসরত দরিদ্র বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর ২১ টি পরিবারকে উন্নতমানের বসতঘর হস্তান্তর করার উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে।
লোহার কাঠামোতে তৈরী এই ঘরগুলো সহজেই স্থাপন-পুনস্থাপন করা যায় এছাড়াও সিমেন্টের তৈরী মেঝের কারনে এটি বাঁশের তৈরী ঘর হতে অত্যন্ত মজবুত। এছাড়াও কিছু পরিবার উন্নতমানের বসতঘরের সাথে তাদের প্রয়োজন অনুসারে গোসলখানার সুবিধা পাবে। চলতি বছরের শুরুতে ইউএনএইচসিআর স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে রান্নার সুবিধার্থে এলপিজি সিলিন্ডার ও চুলা সরবরাহ শুরু করে।
ইতোমধ্যে প্রায় ৬০০ পরিবারকে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের সাথে চুলা সরবরাহ করা হয়েছে। টেকনাফ এলাকায় আরো ৭৮০ পরিবারের মাঝে সিলিন্ডার ও চুলা পৌছে দেয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের সহায়তামুলক কর্মকান্ড আরো জোরদার করতে চাই। আমাদের প্রধান লক্ষ্য মোট ২০,০০০ স্থানীয় পরিবারকে রান্নার চুলা ও এলপি সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে প্রতিদিনের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনা।
এছাড়াও এর অন্যতম লক্ষ্য হল, গাছ কাটা রোধের মাধ্যমে বন উজার বন্ধ করা এবং পরিবারের সূস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরনের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
“স্থানীয় জনগন শরনার্থীদের প্রতি অতুলনীয় মানবতা ও ভ্রাতিত্ববোধ এর নিদর্শন দেখিয়ে তাদের স্বাগতম জানিয়েছে ও আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর আগমনের প্রভাব পড়ছে প্রাকৃতিক সম্পদে ও পরিবেশের উপর” জানিয়েছেন, মারিন ডিন কাইদুমচাই ইউএনএইচসিআর-এর হেড অব অপারেশন, কক্সবাজার।
তিনি আরো জানান, “এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা স্থানীয় দরিদ্র জনগনের সহায়তা করতে চাই। কার্যক্রমগুলো এমনভাবে গ্রহণ করা হয়েছে যেন স্থানীয় দরিদ্র জনগনের মঙ্গল নিশ্চিতের মাধ্যমে শরনার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের মাঝে শান্তিপুর্ন সহাবস্থান রক্ষা করা যায়।