Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ শনিবার, জুন ২০২৫ | ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মামলা নিতে গড়িমসি করায় থানা থেকে বেরিয়ে গায়ে আগুন দিলেন কলেজছাত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৭:৩২ PM
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৭:৩২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য কলেজছাত্রীর। কয়েক দিন ধরে দাম্পত্য কলহ পৌঁছে যায় চরমে। এ নিয়ে শনিবার সকালে রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানায় মামলা করতে যান কলেজছাত্রী।

কিন্তু তার মামলা নেয়নি পুলিশ। এতে নিরূপায় হয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান কলেজছাত্রী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শনিবার বিকেল ৫টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী লিজা রহমান (১৮) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধান পাড়ার আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের মেয়ে। তিনি রাজশাহী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী।

তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন (১৮) রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সাখাওয়াত চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার খানধুরা এলাকার খোকন আলীর ছেলে। ঘটনার পর থেকে পলাতক সাখাওয়াত।

মামলা না নেয়ায় নগরীর শাহমখদুম থানা থেকে ফিরে শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে টিটিসির সামনে গায়ে আগুন দেন ওই ছাত্রী। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয় স্থানীয়রা।

হাসপাতালে কলেজছাত্রী জানান, দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাদের। গত ২০ জানুয়ারি পরিবারের অমতে লিজাকে বিয়ে করেন সাখাওয়াত। এরপর থেকে নগরীর গাঙপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন তারা।

কিন্তু বিয়ের পর থেকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলে আসছিল তাদের। শনিবার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান সাখাওয়াত।

এ নিয়ে নগরীর শাহমখদুম থানায় মামলা করতে যান কলেজছাত্রী। কিন্তু মামলা না নিয়ে তাকে নগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে থানা থেকে বেরিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি।

আগুনে পুড়ে ওই ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক অসীম কুমার। তিনি বলেন, কলেজছাত্রীর কোমরের ওপর থেকে মুখমণ্ডল পর্যন্ত শ্বাসনালীসহ প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে মামলা না নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন শাহমখদুম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারেভজ। তার দাবি, ওই ছাত্রীর মামলা রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছিল। বিলম্ব হওয়ায় থানা থেকে বেরিয়ে যান কলেজছাত্রী। পরে গায়ে আগুন দেয়ার খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

তবে থানায় মামলা দায়ের করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ওই ছাত্রী গায়ে আগুন দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ওই ছাত্রী প্রথমে থানায় গিয়েছিলেন। মামলা না নিয়ে তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে পুলিশ।

গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, থানার ওসিকে কলেজছাত্রী জানিয়েছেন তিনি স্বামীর সঙ্গে সমঝোতা করতে চান। এরপর ওসি তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়ে দেন। সেখানে গিয়ে মামলা করবেন কি-না জানতে চাইলে থানা থেকে বেরিয়ে গায়ে আগুন দেন কলেজছাত্রী।

Bootstrap Image Preview