Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১১ শুক্রবার, জুলাই ২০২৫ | ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্যথানাশক ট্যাবলেট এখন ‘গরিবের ইয়াবা’!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৫ PM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৫ PM

bdmorning Image Preview


কুড়িগ্রামে মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যথানাশক ট্যাবলেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে ৫০, ৭৫ ও ১০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেটের পাতা চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সব ধরনের ব্যথানাশক ট্যাবলেটের ব্যাপক চাহিদা নেই। বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানীগুলো তাদের মার্কেট ধরে রাখতে কৌশল অবলম্বন করে ব্যথানাশকের নাম করে নেশাজাতীয় ক্যাপেইন দিয়ে তৈরি ট্যাবলেট বাজারজাত করে থাকে। এসব ওষুধ সেবন করলে ব্যথার পাশাপাশি ঘুম ও নেশার চাহিদা মেটায়। এটি মার্কেটিং অফিসারদের মাধ্যমে গোপনে ওষুধের দোকানগুলোতে প্রচার-প্রচারণা চালায়। তারপর দোকানের মালিক-কর্মচারী রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্নে অতি লাভের আশায় সরবরাহ করে সেবনকারীদের মাঝে। যা দিনের পর দিন ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ সুবাধে ওষুধ কোম্পানীগুলো তাদের প্রোডাক্টগুলোর পাশাপাশি এসব নেশাজাতীয় ব্যথার ট্যাবলেট দোকানগুলোতে ব্যাপকভাবে বাজারজাত করে। প্রশাসনের তৎপরতায় ইয়াবা-হেরোইন-ফেনসিডিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প দামের এসব ট্যাবলেট বর্তমানে মাদকসেবীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বাজারে বিভিন্ন কোম্পানী ভিন্ন ভিন্ন নামে এ জাতীয় ট্যাবলেট ছেড়েছে। দিনের চেয়ে রাতে এ চাহিদা বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ওষুধের দোকানগুলোতে মাদকসেবনকারীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কুড়িগ্রামের রাজারহাট বাজারের থানা মোড়, সোনালী ব্যাংক চত্বর, চৌরাস্তা মোড়, রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা, নাজিমখান বাজার, নাককাটির হাট, সিঙ্গের ডাবরী হাট, ফরকের হাট, টগরাই হাটসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ওষুধের দোকানে ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওইসব ওষুধ দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।

নেশাজাতীয় ট্যাবলেট কিনতে আসা একাধিক সেবনকারী জানান, প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় বাজারে ইয়াবা সংকট। দামও অনেক চড়া। তাই গরিবের ইয়াবা হিসেবে টাপেন্টা, লোপেন্টা, পেন্টাডল ও সিনটা বিকল্প নেশা হিসেবে ব্যবহার করছি। এরমধ্যে শুধু লোপেন্টাতে হুবাহু হিরোইনের স্বাদ পাওয়া যায়। বাকী সব ট্যাবলেটে ইয়াবার মতো নেশা হয়। এ ট্যাবলেট সেবনে ঘুম ভাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক ধরনের ফিলিংস পাওয়া যায়।

রাজারহাট বাজারের নাম না জানা শর্তে একাধিক ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, ইদানিং উপজেলায় মাদক সেবীদের কাছে ব্যথানাশক ট্যাবলেট ব্যাপক জনপ্রিয়। মাদক সেবীদের শতকরা ৬০-৬৫ ভাগই এখন ব্যথানাশক ট্যাবলেটে আসক্ত। বেশী চাহিদার কারণে এসব ট্যাবলেটের খুচরা মূল্য ২৫-৩০ টাকা হলেও প্রতি পিস ৮০-১০০ টাকা দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ এ এইচ এম বোরহান-উল-ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, নিয়মিত এসব ব্যথানাশক ওষুধ সিগারেট বা আংপাতে পুড়িয়ে ব্যবহার করে ধোয়া টানলে মস্তিষ্কে সমস্যা, কিডনির সমস্যা, মাইগ্রেন, হাড়ক্ষয়, হাইপারটেনশন হতে পারে।

এ ব্যাপারে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ কৃষ্ণ কুমার সরকার বলেন- এসব ট্যাবলেট নেশা হিসেবে ব্যবহার করা হয় তা জানতাম না। প্রেসক্রিপশন ছাড়া যেন বিক্রি না করতে পারে সেজন্য ওষুধ ব্যবসায়ীদের সর্তক করা হবে।

Bootstrap Image Preview