ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সাংবাদিককে হয়রানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এসময় ভুক্তভোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক ইনকিলাবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুর হোসেন ইমনের সঙ্গে কোলাকুলি করেন তিনি। তার অনুসারী সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে শোভন ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় শশরীরে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এ সময় কার্যালয়ে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির ও সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিম (নিবিড়) সহ সমিতির অন্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে মারামারির দৃশ্য ভিডিও ধারণকারী সাংবাদিক দৈনিক ইনকিলাবের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুর হোসেন ইমনকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার পর জোর করে তার মোবাইল থেকে মারামারির ওই ভিডিও মুছে ফেলা হয়।
ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকালে শোভন মধুর ক্যান্টিনে আসেন। দুপুর দেড়টায় তিনি চলে যাওয়ার সময় তার সাথে গাড়িতে ওঠেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও জহিরসহ কয়েকজন।
সে সময় গাড়িতে না উঠতে না পেরে শোভনকে জানান বিদ্যুৎ। এক পর্যায়ে শোভন অন্যদেরও গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জহির ও বিদ্যুতের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে দুজন বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে পরস্পরের দিকে তেড়ে যান। তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে দুজনই মাথায় আঘাত পান।
এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে শোভন বলেন, ‘আমি মূলত তাকে ঘটনাস্থলের মারামারি থেকে বাঁচাতে আমার গাড়িতে তুলেছিলাম। কিন্তু আমি তার প্রতি কোনো আগ্রাসী আচরণ করিনি। আমি এই ঘটনার জন্য দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।’
ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাঁধা দিলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন শোভন।
জোরপূর্বক মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলেটকারী ও হেনস্তাকারী জয় ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, আমি আসলে আমার দুই বন্ধুর (জহির ও বিদ্যুৎ) মারামারি দেখে মানসিকতা ঠিক ছিল না। আমি এই ঘটনার জন্য লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ না করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগেও সাংবাদিকদের লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছিলো শোভনের অনুসারীদের বিপক্ষে।