Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ রবিবার, জুলাই ২০২৫ | ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে স্পিকারকে জিএম কাদের ও রওশনের চিঠি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:১৫ AM
আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:১৫ AM

bdmorning Image Preview


জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) শীর্ষ নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। গত দুদিনে গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি নিজেদের জন্য দাবি করে স্পিকার বরাবর চিঠি দিয়েছেন জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। বিষয়টি শুধু দেবর-ভাবি দ্বন্দ্বে সীমাবদ্ধ নয়, দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও প্রভাব ফেলছে। দলীয় সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরাও দুভাগে বিভক্ত হয়ে বিপরীতমুখী বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে দলের তৃণমূলে।

গত মঙ্গলবার বিকালে জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করতে স্পিকার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। এর পর দিন গতকাল বুধবার বিকালে স্পিকার বরাবর পাল্টা চিঠি দিয়েছেন দলটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ। এই ইস্যুতে রওশন এরশাদ নিজের অবস্থান জানাতে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।

পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল বুধবার কয়েক দফা রওশনের বাসায় বৈঠক হয়। এতে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, মীর আবদুস সবুর আসুদসহ ২০ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে একাধিক নেতা নিশ্চিত করেন।

জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য (রওশনপন্থি) বলেন, জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান নন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যে চিঠি দিয়ে জিএম কাদেরকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন, সেখানে স্পষ্ট লেখা আছেÑ এরশাদের অবর্তমানে জিএম কাদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন, তবে অবশ্যই তা যেন কাউন্সিলের মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নেন। কিন্তু জিএম কাদের সেটি করেননি। তাই এখনো তাকে আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে জানি। একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না।

আরেকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, পার্টির সংসদীয় কমিটির সভা ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা করার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। রওশন আগামী রবিবার আমাদের সংসদীয় দলের সভা ডেকেছেন। সেখানেই আমরা বিরোধীদলীয় নেতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

এদিকে এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার নেতৃত্ব নিয়ে দেবর-ভাবির দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের অবসান হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কিন্তু মৃত্যুর দেড় মাসের মধ্যেই দুই শীর্ষ নেতার সম্পর্ক যে অবস্থায় পৌঁছেছে, তাতে জাতীয় পার্টি আরেক দফা ভাঙনের শিকার হয় কিনা এ শঙ্কা পেয়ে বসেছে নেতাকর্মীদের মাঝে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, যা বলার আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলব। আপনারা বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আমার বাসায় আসুন। সেখানে আমি আমার বক্তব্য সবার সামনে স্পষ্ট করব।

জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়ন প্রশ্নে জোর করে কিছু করা হয়নি। জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরশাদ সাহেব যখন বেঁচে ছিলেন, তিনিও কিন্তু এভাবে বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছিলেন, আমাকে বিরোধীদলীয় উপনেতা করেছিলেন। পরে আমাকে সরিয়ে রওশন এরশাদকে উপনেতা করা হয়, তখনো কিন্তু পার্লামেন্টারি পার্টির কোনো মিটিং করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ফোনে সংসদ সদস্যদের জিজ্ঞেস করেছি। তারা সম্মতি দিয়েছে। লিখিত দিতে বলা হলে ১৫ জন সম্মতিপত্র দিয়েছে। ২৫ জনের মধ্যে ১৫ জন সম্মতি দিলে আর কিছু লাগে না। তাই অন্যদের বলা হয়নি। এখন আরও অনেকে দিতে চাচ্ছে। প্রয়োজন নেই বলে নেওয়া হচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, অন্য কেউ পার্লামেন্টারি পার্টির সভা ডাকতে পারে না। ডাকতে হলে আমিই ডাকব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের অনড় অবস্থানের কারণে জাতীয় সংসদের স্পিকার জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের মতামত চাইবেন। বিধান অনুযায়ী, যার পক্ষে বেশিরভাগ সংসদ সদস্য সমর্থন দেবেন, তিনিই বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার যোগ্য হবেন।

Bootstrap Image Preview