অন্য পুরুষের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক আছে তা আগেই জানতেন স্বামী। বিষয়টি নিয়ে স্বামী বকাঝকা করলেও তাতে কোনো কর্ণপাত করতেন না স্ত্রী। কিন্তু সরাসরি স্ত্রীর এমন আপত্তিকর অবস্থা দেখবেন, তা ভাবতে পারেননি কাওছার (৪০)।
প্রতিবেশী মাসুদ ব্যাপারীর সঙ্গে স্ত্রী সাজেদাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তিনি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হলেও স্ত্রীর হাতেই জীবনের প্রাণ দিতে হলো তার। এ ঘটনায় পুলিশ সাজেদা ও মাসুদকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত সোমবার বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের চর ছয়গাঁও গ্রামের গভীর রাতে এই হত্যাকাণ্ডেরর ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, কাওছারের স্ত্রী সাজেদার সঙ্গে প্রতিবেশি মাসুদ ব্যাপারীর চার বছর ধরে পরকীয়ার সম্পর্ক। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার গ্রাম্য সালিশও হয়। প্রতিবারই অনৈতিক সম্পর্ক রাখবে না বলে প্রতিশ্রুতিও দিতেন পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকা। তারপরও গোপনে তাদের প্রেম চালিয়ে যেতেন।
গত সোমবার নদী থেকে মাছ ধরে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে মাসুদের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন কাউছার। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লাগে। একপর্যায়ে হাতাহাতি, পরে মাসুদ ও সাজেদা মিলে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাওছারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর বাড়ির পাশের খালে তার মরদেহ ফেলে দেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, কাউছার বাড়িতে না থাকায় তিন মাস আগেও সাজেদার সঙ্গে মাসুদকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তারা। সে সময় মাসুদ পালিয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে কাউছার-সাজেদার ঝগড়া হয়েছিল।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রা খালে কাউছারের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম (৩৫) ও মাসুদ ব্যাপারীকে (২৮) গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে তোলা হলে দুজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার শিকদার বলেন, ‘অনৈতিককাজে লিপ্ত অবস্থায় দেখে ফেলায় স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছেলে সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।