Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বৃহস্পতিবার, জুলাই ২০২৫ | ১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে বিদ্যালয়ে সর্বক্ষণ আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৫০ AM
আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৫০ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মধ্য কামদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। এ বিদ্যালয় ভবন এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ কারণে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরাও। দীর্ঘদিন ভবন সংস্কার না হওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানকে ভর্তি করাতে চাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষার্থী সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৯৯৬ সালে নির্মিত এ বিদ্যালয় ভবনে ত্রুটি দেখা দেয়ার পর সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে শ্রেণি কক্ষগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে। বৃষ্টির সময়ে ছাদ চুয়ে পানি পড়ছে মেঝেতে।

অনেক কক্ষের দরজা-জানালা নেই। ফলে সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করায় দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পাঠদান চালু রাখার স্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ চারটি কক্ষে দুই শিফটে চলছে পাঁচটি শ্রেণির ক্লাস। শ্রেণিকক্ষের মধ্যেই রয়েছে অফিস ও লাইব্রেরি কক্ষ।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সাকিব জানায়, বৃষ্টির সময় ছাদ থেকে পানি পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। ক্লাসের মেঝেতে পানি জমে থাকে। তাছাড়া প্রায়ই পলেস্তারা খসে বেঞ্চে পড়ে থাকে। তাই স্কুলে আসতে ভয় করে। একই কথা জানালো চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নয়নসহ আরও কয়েক শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিমা আক্তার জানান, শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এ ভবনে পাঠদান চলে। যে কারণে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য পৃথক ক্লাসরুম থাকার বিধান থাকলেও, সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। এছাড়া গত মাসের শুরুতে মৌসুমী জোয়ারের পানিতে শ্রেণী কক্ষগুলো পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। এতে ভয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতে চায় না।

এ ব্যাপারে মধ্য কামদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির হোসন জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কারণে ভয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না।

জরুরি সংস্কার করে শিক্ষার মৌলিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা না গেলে শিশুরা আরও স্কুল বিমুখ হবে এবং ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। গত অর্থবছরে বরাদ্ধের টাকা থেকে কিছু কাজ করানো হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সংস্কার বরাদ্দ জরুরি বলেও জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুজাম্মেল হোসেন জানান, সংস্কার না করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে রাখা সম্ভব নয়। পলেস্তরা খসে পড়ে যেকোনো সময় বড় কোনো দুঘর্টনা ঘটতে পারে।

এ বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ বিদ্যালয়ের দুরাবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিদ্যালয় ভবন সংস্কারের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

নলছিটি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোজাম্মেল জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ওই বিদ্যালয় ভবনের মেরামতের জন্য আগামী অর্থবছরে সংস্কার বরাদ্দের জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি বরাদ্দ পেলে বিদ্যালয়টির ভবনের সংস্কার কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

Bootstrap Image Preview