Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বৃহস্পতিবার, জুলাই ২০২৫ | ২ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাদ্রাসায় ছেলেদের যৌন নির্যাতন: মুখ খুলে বিপাকে ঢাবি শিক্ষার্থী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০১৯, ০৯:১২ PM
আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০১৯, ০৯:১২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


দেশের মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে বর্ণনা দিয়ে নিজেরাই পোস্ট দিচ্ছেন কেউ কেউ।

এর আগেও মাদ্রাসাগুলোতে যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। গত এপ্রিলে এক মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তার ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের পর পাশবিকভাবে হত্যা করেন। এরপর পরই এসব ঘটনা সামনে চলে আসে।

গত জুলাই মাসে পাঁচজন মাদ্রাসা শিক্ষককে তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ১১ বছরের এক এতিমকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে আটক হন কয়েকজন শিক্ষার্থীও। ১২ থেকে ১৯ বছর বয়সের ডজনখানেক ছেলেকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে একজন মাদ্রাসা শিক্ষককেও গ্রেপ্তার করা হয়।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মাদ্রাসাগুলোতে ধর্ষণ থেকে শুরু করে জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন করা হয়।

শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রধান আবদুস শহীদ এএফপিকে বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় বছরের পর বছর ধরে তা প্রকাশ্যে আসেনি। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শিশু সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠান, কিন্তু তারা এই অপরাধগুলো নিয়ে কথা বলেন না এটা ভেবে যে এতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি হবে।

ঢাকার তিনটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন হুজাইফা আল মামদুহ। গত জুলাইয়ে ফেসবুকে নিজেসহ অন্য মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো প্রকাশ করে দেন তিনি। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মামদুহ বলেন, মাদ্রাসায় যারা পড়াশোনা করেছে তাদের সবাই এই যৌন নির্যাতন সম্পর্কে জানেন।

তিনি বলেন, আমি জানি অনেক মাদ্রাসা শিক্ষক শিশুদের সঙ্গে যৌন মিলনকে বিবাহবহির্ভূত নারীদের সঙ্গে যৌন মিলনের থেকে কম অপরাধ বলে বিবেচনা করেন। যেহেতু তারা মাদ্রাসায় একই ছাত্রাবাসে থাকেন তাই তারা সহজেই তাদের অপরাধ আড়াল করতে পারেন এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এ বিষয়গুলো চেপে রাখতে চাপ দেন।

আল মামদুহের ফেসবুক পোস্টগুলো বেশ বিতর্কের সৃষ্টি করে এবং এজন্য তাকে হুমকিও পেতে হয়েছে। তাকে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের এজেন্ট আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের অভিযোগ আনা হয়। একই সঙ্গে ২০১৫ সালে খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায়ের পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় তাকে।

তবে ফেসবুকে মামদুহ মাদ্রাসায় যৌন নির্যাতন নিয়ে খোলামেলাভাবে লেখার পর অন্যদেরও সেই নীরবতা ভাঙতে উৎসাহিত করে। মোস্তাকিম বিল্লাহ মাসুম একটি ওয়েবসাইটে লিখেছেন, সাত বছর বয়সে সে প্রথম তার মাদ্রাসার এক বড় ভাইয়ের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।

১৫ বছর বয়সি এই তরুণ এএফপিকে জানান, তার এক শিক্ষক তাকে অচেতন করে ধর্ষণ করেছিল। মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন করার তথ্য তার কাছে রয়েছে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা

Bootstrap Image Preview