পিরোজপুরে প্রবাসীকে ‘ফাঁদে ফেলে’ প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মিমি আক্তার (২০) নামে এক নারী পুলিশ সদস্য ও তার বাবাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯-৮-১৯) মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারিক হাকিম আল-ফয়সাল ওই নারী পুলিশ সদস্যের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠায়। এ সময় নারী পুলিশ সদস্যের বাবা মন্নান সিকদারকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
মিমি আক্তার পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী গ্রামের আ. মন্নান সিকদারের মেয়ে। তিনি কনস্টেবল পদে ঢাকা মিল ব্যারাক পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার বেতমোর গ্রামের নুরুল ইসলাম ফরাজীর ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ হোসেনের বাবা-মা ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখেন।
সেই সূত্র ধরে মিমি আক্তারকে পছন্দ করে উভয়পক্ষ পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন। পরে ছেলের বাবা-মা কাউখালীর শিয়ালকাঠী মেয়ের বাড়িতে গিয়ে স্বর্ণালংকার পরিয়ে এনগেজমেন্ট সম্পন্ন করেন।
এরপর উভয় পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। ছেলে-মেয়ের মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ শুরু হয়। মেয়েকে নতুন মোবাইল ফোন কিনে দেয় ছেলে। মেয়ের পড়াশোনা ও চাকরির কথা বলে ছেলের কাছ থেকেও নেওয়া হয় টাকা। সর্বমোট মেয়ে ও মেয়ের মা-বাবা ছেলের কাছ থেকে মালামালসহ প্রায় চার লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়।
এদিকে মিমির পুলিশে চাকরি হয়। সিঙ্গাপুর থেকে ফিরোজ দেশে এসে মিমিকে বিয়ে করতে চাইলে সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ফেরত চাইলে মেয়ে ও মেয়ের বাবা-মা দিতে অস্বীকার করে এবং মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ফিরোজের বাবা নুরুল ইসলাম ফরাজী বাদী হয়ে গতবছর মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিমি ও তার মা-বাবাকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার আসামীরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে মিমি ও তার বাবা মন্নান সিকদারকে জেল হাজতে পাঠায় এবং মিমির মা খাদিজা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেন।