জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পেছনে কারা ছিলেন তা চিহ্নিত এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে শিগগিরই কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার (২৭-৮-১৯) জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘শোকের মাস, ষড়যন্ত্রের মাস আগস্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে না এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আগামী প্রজন্ম জানতে চায় কেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তার হত্যার বিচারের জন্য কেন ২১ বছর দেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। কেন নেপথ্যের মানুষদের এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি।
তিনি বলেন, জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা ছিল তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার সুযোগ আমরা পেয়েছি। সে সুযোগ ছেড়ে না দিয়ে কাজে লাগানোর জন্য একটি কমিশন গঠন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এই কমিশনকে শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে লোকজনকে চিহ্নিত করার কাজ করতে দেওয়া হবে। ইনশাল্লাহ শিগগিরই এ কমিশন গঠন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে পরামর্শ করে বিশেষ এ কমিশন গঠনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল। জিয়াউর রহমান সরকার গঠনের পর পাকিস্তানের দোসরদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্যে তারা ছিল।
জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন তারা পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রিসভাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্ত বাংলাদেশে থাকলে বাংলাদেশকে মেরে ফেলা যাবে না। তাই বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার লক্ষ্যে তার শিশুসন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রক্ত বা তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশের ক্ষমতা নিয়ে দেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।
এর আগে, আলোচনা সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি।
তিনি ভারতে অবস্থান করে বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তিনি যে ক্যাম্পে অবস্থান করতেন সেখান থেকে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দিকে চলে যেতেন। কোথায় যেতেন তা কেউ জানতো না। তবে তাকে মুক্তিযুদ্ধে কোথাও অংশ নিতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে একাধিক সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব একেএম আতিকুর রহমান, সাবেক সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, মার্টিন অধিকারী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার প্রমুখ।