মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। জোরদার করা হয়েছে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রত্যাবাসন এর তালিকাভুক্ত থাকা ২৩৫ রোহিঙ্গা পরিবারের সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে।
দুইদিন ধরে তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। কক্সবাজারের টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ সাক্ষকার গ্রহণ করা হয়। ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধিরা ক্ম্ক্যাম্পে গিয়ে এসব রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎ নেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। ‘প্রত্যাবাসনের তালিকায় নাম থাকা ২৩৫ রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য্য বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। ঘুম ধুম ট্রানজিট পয়েন্ট প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি, ৫ টি বাস ২ টি ট্রাক সকাল থেকে টেকনাফের শালবন ক্যাম্পে থাকবে। এই প্রক্রিয়াকে নিরাপদ করতে ক্যাম্প ও সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত দুই দিনে ৮ টি বুথ করে পর্যায়ক্রমে ৩ হাজার ৫৪০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। তবে সাক্ষাৎকার দেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরে যাবেন কি না বা তারা কি বলেছে এসব বিষয়ে খোলামেলা কিছুই বলেননি শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
টেকনাফের শালবন ২৬ নম্বর ক্যাম্পে বসবাসরত আবুল কাশেম বলেন, আমাদেরকে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, নিজের বসত বাড়ি ফেরত সহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই কেবল আমরা মিয়ানমারে ফেরত যাব।
অন্যথায় আমরা যাব না। একই ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা আমির হোসেন বলেন, আমাদের ছয় দফা দাবি না মানলে আমরা ফেরত যাবো না। ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসনের জন্য ৩হাজার ৫৪০জন রোহিঙ্গাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
এজন্য কাজ করছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’ এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।
পুরনোসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।