ওপরে সামিয়ানা টাঙিয়ে সরাসরি রোদ পড়া ঠেকানো হয়েছে। কিন্তু রোদের তাপ তো আছেই। যে কারণে একটু পর পর ভেজা গামছায় শরীর মুছে দেওয়া হচ্ছে। গায়ে বাতাস লাগানো হচ্ছে। বিদায় বেলায়ও ‘রাজাবাবুর’ যত্নের কোনো ধরণের কমতি নেই।
রাজাবাবুকে ঘিরে জনা ত্রিশেক মানুষের জটলা। কেউ কেউ ছবি তুলছেন ‘রাজাবাবুর’। কেউবা দাম জানতে চাইছেন। আবার কেউ রাজাবাবুর বেড়ে ওঠার গল্প শুনছেন। আবার কেউ কেউ ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করছেন।
রাজাবাবু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে এবারের কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য উঠেছে। ব্রামা জাতের গরু রাজাবাবু। স্বভাবও যেন রাজাবাবুর মতোই। হাঁটা চলায় গম্ভীর ভাব। পা ফেলে ধীরে ধীরে। স্বভাব খুবই শান্ত। তবে দেখতো কালো।
গত মঙ্গলবার দুপুরে হাটে দেখা মেলে রাজাবাবুর। বাড়তে বাড়তে তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা দাম উঠেছে। রাজাবাবুর মালিক কাইয়ুম মিয়ার দাবি আট লাখ টাকা। তবে এর কিছু কম হলেও তিনি এবারের হাটে সেটা বিক্রি করে দিতে চান। রাজাবাবুই এ বাজারসহ আশেপাশের বাজারের সবচেয়ে বড় গরু।
আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুর পহেলা গ্রামের গরু খামারি মো. কাইয়ুম মিয়া জানান, রাজাবাবুর বয়স দুই বছর আট মাস। নিজ খামারে তার জন্ম। এখন তার ওজন প্রায় ২০ মণ। দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফুট। উচ্চতায় পাঁচফুটেরও বেশি। অন্য গরুর চেয়ে বেশ আলাদা বলেই তার নাম রাজাবাবু রাখা।
কাইয়ুম মিয়া আরো জানান, কোনো প্রকার ক্ষতিকর ট্যাবলেট ও ইনজেকশন ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক খাদ্যে নিয়মিত যত্নে ধীরে ধীরে গরুটিকে বড় করা হয়। খড়, তাজা ঘাস, খৈল, ভূষি, চালের কুড়া, ভাতসহ পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয় রাজাবাবুকে। তিনিসহ বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি আরো একজন নিয়মিত শ্রমিক আছে রাজাবাবুকে দেখভাল করতে। খাবারসহ আনুষাঙ্গিক কাজে রাজাবাবুর জন্য প্রতিদিন এখন তিন থেকে চারশ’ টাকা প্রয়োজন।