রাজশাহীর দুর্গাপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বসানো হয়েছে পশুর হাট। সোমবার উপজেলার কানপাড়া বাজার এলাকায় বাজুখলসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। এমনকি ওই স্কুলে পরীক্ষা চলাকালীন সময়েই বসানো হয় পশুর হাট।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজুখলসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছিল কমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। মাঠটি চারপাশে পাচির দিয়ে ঘেরা। ওই ঘেরা মাঠের মধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি জোর করে পশুর হাট বসিয়ে হাটের নামে চাঁদাবাজি করছে। আর তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা ও সভাপতি। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পড়াশোনার মান নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পশুর হাটের নামে চলছে চাঁদাবাজি। তারা হাট ইজারার নামেই মাত্র অলিখিত ছাড়পত্র দিয়ে গরু প্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং ছাগলের ৫০০ টাকা করে আদায় করে নিচ্ছেন ওই মহলটি। এতে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে উল্ট বিপাকে পড়ছে ক্রেতা ও বিক্রেতারা। তারা ভয়ে টাকা দিয়ে অলিখিত ছাড়পত্র নিয়ে চলে যাচ্ছে। গ্রামের সাধারণ সহজ-সরল মানুষগুলোকে ভয় দেখিয়ে গুটি কয়েক অসাধু ব্যক্তি চাঁদা আদায় করছে। স্থানীদের দাবি দ্রুত পশুর হাট বন্ধ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার।
পাঁচুবাড়ীর এলাকার গরু বিক্রেতা আব্দুল হানিফ অভিযোগ করে বলেন, কোরবানি পশুর হাটের নামে গ্রামের সাধারণ মানুষগুলোর কাছ থেকে তারা চাঁদাবাজি করছে। চেয়ারম্যান ক্ষমতা দেখিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট করে বসানো হয়েছে পশুর হাট।
বাজুখলসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মরিয়ম বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও হাট কমিটিকে নিষেধ করা হলেও তারা জোর করে পশু হাট বসিয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মুনছের আলী বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান সমসের আলীর চাপের মুখে আমি বাধ্য হয়েছি বিদ্যালয় মাঠে পশু হাট বসাতে। মাঠে পশু হাট বসাতে না দিলে তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকিও দিয়েছেন।
এদিকে চেয়ারম্যান সমসের আলী বিদ্যালয়ে হাট বসানোর কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা হাটের টাকা পকেটে নেব না। সব টাকা মসজিদের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, স্কুল মাঠে হাট বসানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় কেউ অভিযোগ করেনি। এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দুর্গাপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বলেন, বিষয়টি আমরা জানা নেই। তবে স্কুলের ভেতরে যদি হাট বসে থাকে তা হলে আমি শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে প্রয়োনীয় ব্যবস্থা নেব।