নুরুন্নাহার নামে ৬০ বছররে এক বৃদ্ধ মাসহ ছোট ২ বোনকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলে আনোয়ার হোসেন কাইয়ুম ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের কাছে এমন অভিযোগ শুনে স্থির থাকতে না পেরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম ওই বাড়িতে গিয়ে ঘরের তালা ভেঙে বৃদ্ধ মা ও তার দুই মেয়েকে ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ইউএনও আসার খবরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ওই ছেলে।
বৃদ্ধ নুরুন্নাহার টাঙ্গাইল পৌরসভার সন্তোষ বাগবাড়ি এলাকার মৃত খন্দকার আবদুল করিমের স্ত্রী। ২০ জুলাই তার সৎছেলে আনোয়ার হোসেন কাইয়ুম ও তার স্ত্রী তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বৃদ্ধ মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আসছে তার সৎছেলে আনোয়ার হোসেন। তার স্ত্রীও ওই বৃদ্ধা ও তার মেয়েদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। সম্প্রতি আনোয়ার লোভে পড়ে তার সৎ মেজো বোনের সঙ্গে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের বিয়ে ঠিক করে। এই বিয়েতে তার বোন ও মা রাজি না হওয়ায় বোনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে দুই বোন ও মাকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা দেয় আনোয়ার।
স্থানীয়রা জানান, আনোয়ারের মা মারা যাওয়ার পর খন্দকার আবদুল করিমের সঙ্গে এই বৃদ্ধার বিয়ে হয়। তখন থেকে তিনি আনোয়ারের দেখাশোনা করতেন। আবদুল করিম অসুস্থ থাকাবস্থায় আনোয়ার হোসেন জালিয়াতি করে জমিজমা নিজের নামে করে নিয়েছে।
সৎছেলে আনোয়ার তার বাবার মৃত্যুর পর মায়ের খোঁজখবর নেয়া বন্ধ করে দেয়। বৃদ্ধার তিন মেয়ে। ছোট মেয়েটি বোবা। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। মেজো মেয়েকে এখনও বিয়ে দেননি। আনোয়ারের বাবার মৃত্যুর পর তার একটি বড় ঘরের পাশে টিনের একচালা পুরনো ছোট ঘরে বৃদ্ধা তার দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন।
বৃদ্ধ নুরুন্নাহার বলেন, আমার মেয়ে ফরিদার সঙ্গে ৬০ বছরের এক বৃদ্ধের বিয়ে ঠিক করে আনোয়ার। মেয়ে রাজি না হওয়ায় আনোয়ার তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। এর প্রতিবাদ করলে দুই মেয়েসহ আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয় আনোয়ার। পরে ইউএনও স্যার তালা ভেঙে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
এ বিষয়ে ইউএনও আতিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে মা ও দুই মেয়েকে ওই ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তখন অভিযুক্ত আনোয়ার ও তার স্ত্রীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
বৃদ্ধাকে দ্রুত বয়স্ক ভাতার কার্ড দেয়া হবে বলে জানান ইউএনও। এ ছাড়া বৃদ্ধা ও তার মেয়েদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকটিও দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউএনও আতিকুল।