মোহাম্মদপুরের গৃহবধূ শারমিন হত্যা মামলার আসামি মো. আমির হোসেনকে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাকে গ্রেফতার করতে ঢাকা মহানগর পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আল-আমিন শেখ তার সঙ্গে থাকা ফোর্স নিয়ে দুই দিন ধরে চট্টগ্রামে অবস্থান করেছিলেন।
নানা কৌশলের পর অবশেষে নিজেকে একজন সিএনজি চালক পরিচয় দিয়ে আসামিকে ধরতে ফাঁদ পাতেন তিনি।
স্থানীয় সিএনজি মালিকের কাছে লুঙ্গি-গেঞ্জি পড়ে বার বার কাজের খোঁজে গিয়ে গোপনে আসামির সন্ধান করেছেন আল-আমিন শেখ। অবশেষে সেই ফাঁদেই ধরা পড়েছেন ঢাকা থেকে পালিয়ে যাওয়া শারমিন হত্যা মামলার আসামি আমির হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মামলাটির তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামির অবস্থান চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় জানতে পারি। এরপরে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে দুই দিন আগেই আমি চট্টগ্রামে যাই। পালিয়ে যাওয়া শারমিন হত্যার আসামি আমির হোসেন পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিলেন। তাই তিনি চট্টগ্রামে পালিয়ে গিয়ে সেখানেও সিএনজি চালানোর চেষ্টা করছিলেন। সে কারণে আমি নিজেও সিএনজি মালিকের কাছে গিয়ে আগের দিন বলেছি যে, আমি সিএনজি চালাতে পারি। আমাকে যেন সিএনজি চালানোর একটা কাজ দেওয়া হয়।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এভাবেই আমি আসামির খোঁজ করছিলাম। পরের দিন আবারও একই অজুহাতে সেখানে গিয়েছিলাম। সর্বশেষ ওই এলাকার এক দারোয়ানের আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তির বাসা থেকে আমির হোসেনকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসি।’
এসআই আল-আমিন বলেন, ‘আজ দুপুরে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধসহ আসামিকে আদালতে সোপর্দ করেছি।’
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর এসআই মো. আল-আমিন শেখের নেতৃত্ত্বে একটি টিম গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ইপিজেড থেকে আসামি মো. আমির হোসেনকে (২৮)গ্রেফতার করেছে।’
পিবিআই প্রধান বলেন, ‘আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, আসামি আমির হোসেন ভিকটিম শারমিনকে বিবাহের পূর্বে আরও দুটি বিয়ে করে। এই মামলার ভিকটিম শারমিন আসামি আমির হোসেনের তৃতীয় স্ত্রী। আসামি তার দাবীকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে এবং তার একাধিক স্ত্রী থাকায় পারিবারিক কলহের জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গত ২ জুলাই ভোরে বটি দিয়ে কুপিয়ে শারমিনকে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে ভিকটিমের গোঙানির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যায়। পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শারমিন। শারমিন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা বটিটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’