Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বৃহস্পতিবার, জুলাই ২০২৫ | ২ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

উপসচিব রেজাউল করিমের ফাঁসির দাবিতে মিরপুর রোড অবরোধ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০১৯, ১০:৪৩ PM
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯, ১০:৪৩ PM

bdmorning Image Preview


সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া উপসচিব ও রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম রেজাউল করিম রতনের ফাঁসিসহ ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। সাবেক ওই অধ্যক্ষ কলেজের এক ছাত্রীকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর মিরপুর সড়কের আড়ংয়ের মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেন বিচার প্রত্যাশীরা। শিক্ষার্থীরা প্রথমে আড়ং মোড়ে দাঁড়িয়ে চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেন। তবে যানজটের কথা বলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের তিন দফা রাস্তা থেকে উঠিয়ে দেয়। কিন্তু পুনরায় তারা আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। সে সময় তাঁরা ‘উই আর রেপড, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। সে সময় চারপাশের রাস্তা বন্ধ থাকায় বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী তাইজুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে নেমেছি বিচারের আশায়। আমরা ওই শিক্ষকের ফাঁসি চাই। আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, যাতে আমারা আন্দোলন থেকে সরে যাই।’

এক ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়ানোর পর শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে উঠে যান। এর আগে আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি জি বিশ্বাস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাদের আশ্বাসেই শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছাড়েন।

এই বিষয়ে শাহিন বলেন, ‘প্যানেল মেয়র এবং ওসি আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন যে আগামী পরশু দুপুর ২টার সময় আমাদের কলেজে তারা ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে বসবেন। প্রতিষ্ঠান কী বিচার করে সেটা দেখে আমরা আবার আন্দোলনে নামব। আগামী বুধবার দুপুর পর্যন্ত আমরা দেখব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব কী ধরনের আন্দোলনে আমরা যাব।’

আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম রেজাউল করিম রতন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কলেজের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক পান করিয়ে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও করেন। এরপর ওই ভিডিও প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে টানা এক বছর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।

শিক্ষার্থীরা আরো জানান, গণমাধ্যমে তাকালেই দেখি আমাদের বোনেরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত এভাবেই নিজ প্রতিষ্ঠানে ধর্ষিত হচ্ছে। এত ধর্ষকের কথা শোনো কিন্তু ন্যায্যবিচার পেতে শুনেছ কখনো? পাওনি। কারণ যারা বিচার করেছে, তারাও মানসিকভাবে ধর্ষক আর আমরা দর্শক। এত দিন তো ঢাকার বাইরে হয়েছে। এখন ঢাকার ভেতরে। তার পরও কি চুপ থাকবে তোমরা? আমরা ছাত্রছাত্রীরা বিচার না পেলে বিচার আদায় করে নিতে জানি, যা হয়তো ধর্ষক সমাজ জানে না।

অভিযুক্ত রেজাউল করিম রতন পদোন্নতি পেয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পদে কর্মরত ছিলেন। তবে ঘটনার বিচার দাবি করে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী মামলা করলে রেজাউল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে রেজাউল করিমের ফাঁসি, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের নিরাপত্তা প্রদান, মামলার কাজ দ্রুত শেষ করা, ধর্ষণের সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান, কোনো প্রকার জামিন মঞ্জুর না করা, মামলার কাজ শেষ না হাওয়া পর্যন্ত আসামিকে আইনের আওতায় রাখতে হবে।

Bootstrap Image Preview