Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন ও যৌনকর্মে প্রিন্সের মৃত্যু, আমিরাতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:১১ PM
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:১১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


লন্ডনে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রভাবশালী আমির শেখ সুলতান বিন মুহাম্মদ আল কাশিমির ছেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অতিরিক্ত ইয়াবা সেবন ও যৌন উন্মত্ততার কারণেই আমিরাতের এই প্রিন্সের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার (১ জুলাই) লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই অ্যাপার্টমেন্টে তাকে অবচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত ওই আমিরাতি প্রিন্সের নাম প্রিন্স শেখ খালিদ বিন সুলতান আল কাশিমি। তিনি পেশায় একজন ফ্যাশন ডিজাইনার ছিলেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম লন্ডনের নাইটসব্রিজে ৮ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে তার। এছাড়াও কাশিমি হোম্ম ব্র্যান্ড নামে নিজস্ব ফ্যাশন ডিজাইন প্রতিষ্ঠান ছিল শেখ খালিদ বিন সুলতান আল কাশিমির। কিন্তু জীবন যাত্রার দিক দিয়ে তিনি ছিলেন কিছুটা উশৃংখল প্রকৃতির। এ উশৃংখল জীবন যাত্রাই অবশেষে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার জন্য।

এ বিষয়ে ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে বলেছে, আমিরাতি প্রিন্স শেখ খালিদ বিন সুলতান আল কাশিমি তার অ্যাপার্টমেন্টে একটি ‘সেক্স অ্যান্ড ড্রাগ’ পার্টির আয়োজন করেছিলেন। সেখানে অতিরিক্ত মদ্যপান ও যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

শেখ খালিদ বিন সুলতানের অফিসের কর্মচারীদের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল বলছে, সেখানে প্রায়ই কয়েক দিনব্যাপি উঁচু শ্রেণির পতিতাদের নিয়ে অ্যাপার্টমেন্টেই সেক্স পার্টির আয়োজন করতেন এই আমিরাতি যুবরাজ। পার্টিতে থাকতো শক্তিশালী মাদক ‘মেথামফেটামাইন’। যা নিয়মিত সেবন করতেন তিনি।

(এমমেথামফেটামাইন ভারতীয় উপমহাদেশে ইয়াবা নামেই বেশি পরিচিত। কারণ, ইয়াবা তৈরির মূল উপাদানই হচ্ছে এমমেথামফেটামাইন।)

এছাড়াও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী ডেইলি মেইলকে বলেন, প্রিন্স খালিদ ‘মেথামফেটামাইন’ নিতেন, কারণ এটা নেয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে যৌন কর্মে লিপ্ত থাকা যায়। এটা হচ্ছে অফিসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট গোপনীয় বিষয়, মাদকের প্রতি তার আসলেই দুর্বলতা ছিল।

‘আমরা সব সময় জানতাম যে, তিনি এটা নিচ্ছেন। কারণ তিনি প্রত্যেক দিন অফিসে আসতেন খারাপ মেজাজে। তিনি খুবই খারাপ আচরণ করতেন। অন্য সময় তিনি খুবই ভালো। তবে কঠিন প্রকৃতির হলেও তিনি অত্যন্ত সৎ ছিলেন। কিন্তু তিনি যখন বেশ কয়েকদিন ধরে ওই পার্টি করতেন, তখন পুরো দানবের মতো হয়ে যেতেন।’

এছাড়াও কাশিমি হোম্ম ব্র্যান্ডের একজন কর্মচারী দাবি করেছেন, সাপ্তাহিক পার্টি শেষে অফিসে এসে প্রিন্স খালিদ চেয়ার এবং অন্যান্য আসবাবপত্র ছুড়ে মারতেন। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে তারা সব সময় মুখ বন্ধ করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, যুবরাজের সেক্স অ্যান্ড ড্রাগ পার্টিতে আসতেন মূলত তার বন্ধু-বান্ধব ও ব্যবসায়িক সহযোগীরা। আমরা কখনই আমন্ত্রণ পেতাম না। সেখানে কী ঘটে আমরা শুধু সেটাই শুনতাম।

অপরদিকে, আমিরাতি এ প্রিন্সের মৃত্যুর ঘটনায় লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার করোনার অফিস বলছেন, প্রিন্সের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে তার শরীরে মাদক কিংবা অন্য কিছুর উপস্থিতি আছে কি-না তা প্রতিবেদন হাতে পেলেই জানা যাবে। তবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হতে আরো কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগতে পারে।

বুধবার (৩ জুলাই) প্রিন্স খালিদ আল কাশিমির মরদেহ আমিরাতে দাফন করা হয়েছে। এছাড়াও আমিরাতি এই প্রিন্সের মৃত্যুতে দেশটিতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও পতাকা অর্ধনমিত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

Bootstrap Image Preview