Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১১ শুক্রবার, জুলাই ২০২৫ | ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাবা ভাড়া দিতে না পারায় ছেলেকে হত্যা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৯, ১১:০৮ AM
আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯, ১১:০৮ AM

bdmorning Image Preview


টঙ্গীর একটি ছোট বাসায় বাবা-মায়ের সঙ্গে খুব ভালোভাবেই কাটছিল ১৪ বছরের সাইফের জীবন। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। আর পড়াশোনার পাশাপাশি বাবাকেও নানা কাজে সহযোগিতা করত সাইফ।

সাইফের বাবা আব্দুল কাইয়ুম স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপ হারুন আর রশিদ (৪৫) নামক একজনের কাছ থেকে মাসিক ১৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেয়। গত শনিবার (২২ জুন) ওই ভাড়ার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয় সাইফ।

পরিবার ও র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, ভাড়া পরিশোধ না করায় হারুন অর রশিদ ভাড়া পরিশোধের জন্য তাগাদা দিচ্ছিল। কিন্তু ভিকটিমের বাবা ভাড়া পরিশোধে ব্যর্থ হয়। হত্যাকাণ্ডের দিন সাইফের বাবা আব্দুল কাইয়ুম ছেলেকে দোকান খুলতে বলে ভাড়ার টাকার বন্দোবস্ত করার জন্য পরিচিত আত্মীয়দের কাছে যায়। ওই সময় দোকানের মালিক হারুন অর রশিদ ও তার পাঁচ থেকে ছয় জন সহযোগী নিয়ে ভাড়া তুলতে দোকানে যায়। এ সময় তারা ভাড়ার টাকা না পেয়ে সাইফকে ব্যাপক মারধর করে দোকানের স্যাটার বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়।

পরবর্তীতে বন্ধ দোকানটির ভেতর চলন্ত লেদ মেশিনের শব্দ পেয়ে পাশের দোকানের ও স্থানীয় লোকজন ভেতরে প্রবেশ করলে সাইফকে লেদ মেশিনের সঙ্গে প্যাঁচানো অবস্থায় দেখে। গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, এই ঘটনার পরে নিহতের মা শহিদা বেগম বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হারুন অর রশিদকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার হওয়া আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বারত দিয়ে র‌্যাব জানায়, হারুন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে ১৯৯০ সালে শাফিউদ্দিন সরকার একাডেমি থেকে এসএসসি, নটরডেম কলেজ হতে ১৯৯২ সালে এইচএসসি এবং ইউনির্ভাসিটি অফ সেন্ট্রাল অক্লাহোমা আমেরিকা থেকে ২০০০ সালে বিবিএ সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে সে ‘মুন সান প্রোপারটিজ’ নামক একটি ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। পাশাপাশি মাছিমপুর এলাকায় ভাড়ায় তার বেশ কয়েকটি দোকান আছে।

এসব দোকানের একটিতে ভিকটিমের বাবা দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্কসপ পরিচালনা করে আসছিল। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসের ভাড়া পরিশোধ করার কথা থাকলেও ভিকটিমের বাবা গত মে ২০১৯ মাসের ভাড়া সময়মত পরিশোধ করে নাই। এ নিয়ে একাধিকবার তাগাদা দিলেও ভিকটিমের বাবা আব্দুল কাইয়ুম ভাড়া পরিশোধে ব্যর্থ হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, গত ২২ জুন ২ আসামি বর্ণিত দোকানে গিয়ে স্যাটর বন্ধ করে দিয়ে ভাড়া না দেওয়া পর্যন্ত দোকান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়ে চলে যায়। একই দিনে কিছু সময় পর সে জানতে পারে যে, দোকানটি পুনরায় খোলা হয়েছে। এরপর সে রাগান্বিত হয়ে বেশ কয়েকজন লোক নিয়ে ওই দোকানে যায়। দোকানে গিয়ে দোকানের মালিককে না পেয়ে তারা তার ছেলের ওপর চড়াও হয়। এ সময় ভিকটিমকে মারধর করার সময় ভিকটিম চলন্ত লেদ মেশিনে পড়ে গেলে তারা তাকে ভেতরে রেখেই বাইরে থেকে দোকানের স্যাটার বন্ধ করে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

Bootstrap Image Preview