বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তর প্রদান ও চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আটককৃতরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উত্তর প্রদানের আশ্বাস দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে একজনকে এবং শুক্রবার (২১ জুন) অপর ১৩ জনকে আটক করা হয়।
শুক্রবার (২১ জুন) জেলার ৬টি উপজেলার ৩৭টি কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রের আশপাশ থেকে পুলিশ ১৩ জালিয়াত চক্রের জনকে আটক করে।
আটকরা হলেন- রাজু, সালাম, ইউনুস আলী, ইসমাইল হোসেন, মেহেদী হাসান, ওবায়দুর রহমান, হারুন, সিজু মিয়া, আহসান, আলমগীর কবির, সুমন, হাসনাতুন জাহান ও সাইফুল ইসলাম। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে থেকে তারা সুকৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আদান প্রদান করছিলেন।
এ বিষয়ে র্যাব জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ছিল শুক্রবার। এই পরীক্ষা সামনে রেখে প্রশ্নফাঁসের প্রলোভন দিয়ে অর্থ লেনদেনে জড়িত প্রতারক চক্রের সন্ধান পায় র্যাব। বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব সদস্যরা শহরের লতিফপুর কলোনি এলাকা থেকে আলমগীর হোসেন নামে একজনকে ১০ লাখ টাকার চেকসহ আটক করেন। আটককৃত আলমগীর লতিফপুর এলাকার আবেদ আলীর ছেলে।
এ সময় র্যাব আরও জানান, আটককৃত আলমগীর এক প্রার্থীকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দেয়ার নামে ১০ লাখ টাকা চুক্তি করেন এবং প্রার্থীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা করে ১০ লাখ টাকার দুটি চেক নিয়ে রাখেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা তাকে আটক করে। পরবর্তীতে শুক্রবার আলমগীর হোসেনকে সদর থানায় হস্তান্তর করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
র্যাব-১২ বগুড়ার স্পেশাল কোম্পানির অধিনায়ক মেজর এস এম মোর্শেদ হাসান বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের নামে অর্থ আদায়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে র্যাব তথ্য পেয়েছে। আলমগীরকে আটকের পর অন্য ব্যক্তিদের ধরতে মাঠে নেমেছে র্যাব।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশ থেকে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বেগম তহমিনা খাতুন জানান, শুক্রবার জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে ছয় উপজেলার ৩১ হাজার ৯৯৭ জন পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২৮ জুন অপর ছয় উপজেলার পরীক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক বলেন, এবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপানো থেকে শুরু করে কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত নজিরবিহীন গোপনীয়তা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।