Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

দিনাজপুরে দুই বন্ধুর গলা কাটা উদ্ধার, আটক ৩

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০১৯, ১১:৫৭ AM
আপডেট: ৩১ মে ২০১৯, ১১:৫৭ AM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


দিনাজপুরের বীরগঞ্জে দুই তরুণের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দুই বন্ধুর মরদেহ দুটি রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের মদনপুর এলাকার আজাহার আলীর ছেলে হানিফুর রহমান (২৮) এবং দেবীপুর গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে বিপ্লব চন্দ্র রায় (২৫)। এ ঘটনায় নিহতদের দুই ভাই ও এক বন্ধু এবং স্থানীয় এক মসজিদের ইমামকে আটক করা হয়েছে। থানা-পুলিশ, পিবিআই ও র‌্যাবের সদস্যরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে নিজপাড়া ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের কাঁচা রাস্তার ধারে দুজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকার মানুষ। পরে তারা পুলিশে খবর দেয়।

বীরগঞ্জ থানার ওসি শাকিলা পারভিন জানান, গতকাল ভোর ৪টায় খবর পেয়ে উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দেবীপুর বালাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা দুজনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার পর এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। তবে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এখনো তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। তবে দুজনে কোনো অপরাধীচক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানায় আনা হয়েছে। তাঁদের পিবিআই ও র‌্যাব সদস্যরাও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক চারজনের মধ্যে রয়েছেন দেবীপুর জামে মসজিদের ইমাম ও সোলার ডিপ টিউবওয়েলের নৈশ প্রহরী মোজাম হোসেন, মদনপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে নিহতদের বন্ধু মুন্না, নিহত হানিফুর রহমানের আপন চাচাতো ভাই জাকির হোসেন এবং নিহত বিপ্লবের ছোট ভাই অর্জুন রায়।

হানিফুরের বড় ভাই হালিমুজ্জামান হালিম জানান, হানিফুর সম্প্রতি খারাপ প্রকৃতির বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। প্রায়ই গভীর রাতে বাড়ি ফিরে আসেন। এ জন্য তাঁকে সাবধানও করা হয়। কিন্তু তিনি পরিবারের কথা শোনেননি। গত বুধবার সকালে হানিফুর ভারতীয় গ্ল্যামার মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁরা দুজন একই ওষুধ কম্পানিতে চাকরি করতেন বলে পরিবারকে জানিয়েছিলেন, কিন্তু বাস্তবে তাঁরা কোনো ওষুধ কম্পানিতে চাকরি করতেন না।

এদিকে বিপ্লবের পিতা রাজেন্দ্রনাথ রায় জানান, বুধবার আনুমানিক সকাল ১০টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বিপ্লব। এরপর গভীর রাতেও বাড়ি ফিরে না আসায় তাঁর মা মৃত্তিকা রায় কৌশলা ফোন করলে তিনি জানান যে তাঁরা তিন বন্ধু একসঙ্গে আছেন। এরপর রাত ১২টায় বিপ্লব তাঁর মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শেষ কথা বলেছেন। তখন তিনি তাঁর মাকে জানান যে তাঁর বাড়ি ফিরতে দেরি হবে।

বীরগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন জানান, নিহত দুজনের অতীত ও বর্তমান জীবনের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

এ ঘটনায় নিহত হানিফুরের বড় ভাই মো. হালিমুজ্জামান হালিম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

বীরগঞ্জ থানার পরিদর্শক শাকিলা পারভীন গতকাল বিকেলে জানান, মরদেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। চারজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

Bootstrap Image Preview