Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ বুধবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবৈধভাবে বিদেশ গিয়ে জীবন নষ্ট করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৯, ১০:১৬ AM
আপডেট: ২৯ মে ২০১৯, ১০:১৬ AM

bdmorning Image Preview


সোনার হরিণের খোঁজে অবৈধভাবে বিদেশ গিয়ে জীবন নষ্ট না করার জন্য বিদেশ গমনেচ্ছুদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে না গিয়ে দেশেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করুন।

মঙ্গলবার (২৮ মে) জাপান সফরের প্রথম দিন টোকিও পৌঁছেই প্রবাসী বাংলাদেশি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। বহুলোক তাদের গন্তব্য সম্পর্কে না জেনে, চাকরির ধরন না বুঝে ভালো ভবিষ্যতের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমায়।

তিনি বলেন, অনেক মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি, জমি-জমা বিক্রি করে দালালের হাতে টাকা তুলে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে যায়। অথচ তারা সঠিকভাবে জানে না, কোথায় চাকরি হবে অথবা কত বেতন এবং কী সুবিধা তারা পাবে।

বিদেশ যেতে আগ্রহীদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে ডিজিটাল কেন্দ্রে আপনার নাম (বিদেশে চাকরি প্রত্যাশীদের) নিবন্ধন করুন এবং পরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সবকিছু জেনে বিদেশে যান। সরকার ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য বিদেশে চাকরি প্রার্থীরা সেখান থেকে ঋণ নিতে পারেন।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ অনেকগুলো চাকরির সুযোগ সৃষ্টিকারী প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া, সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারের এসব উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং খাদ্যশস্য, শাক-সবজি, ফল, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর কাতারে উঠে এসেছে।’

তিনি বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে জনগণের মুখে হাসি ফুটানোর একটা লক্ষ্য আমার রয়েছে; যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার বদলে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য জাপানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূতাবাসের উদ্যোগের পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার খুঁজে বের করুন আপনারা।

জাপানকে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন অংশীদার আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং তারা আমাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ (১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ শেষে) পুনর্গঠনে প্রচুর সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ক গভীর –এটা প্রমাণ করতে ক্ষমতায় আসার পর পর আমি জাপান সফর করি।

এ প্রসঙ্গে তিনি সোনারগাঁও হোটেল ও যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এবং পদ্মা সেতু নির্মাণে সমীক্ষা পরিচালনায় জাপানের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

জাপানের আরও বিনিয়োগ কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগে তাদের আকর্ষণ করতে আমরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমি বরাদ্দ দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে কৃষিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

শিশুদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সমকালীন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারা যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সে লক্ষ্যে আমার সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। শিশুদের আমরা কম্পিউটার শিক্ষা দিচ্ছি।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, দুই প্রবাসী বাংলাদেশি সালেহ মোহাম্মদ আরেক ও সাকুরা সাবের বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তথসূত্র: বাসস।

Bootstrap Image Preview