উত্তর জনপদের শষ্য ভাণ্ডার খ্যাত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার বাগানে ও বাড়ির উঠানের লিচু গাছের শাখায় ঝুলছে থোকায় থোকায় লিচু। প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় লিচু। মিষ্টি ও রসালো স্বাদ আর বৈশিষ্ট নিয়ে বিভিন্নজাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-৩ সহ দেশি জাতের লিচুর ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা।
এখন আম-লিচুর ভারে ছেয়ে গেছে চারপাশের গাছগুলো। লিচুর ছড়িয়ে যাওয়া মৌ মৌ গন্ধের টানে মধু আহরণে গাছে গাছে ছুটাছুটিতে ব্যস্ত খুদে মাছি ও মৌমাছিরা। আত্রাইয়ে লিচুর আবাদ তেমন একটা না হলেও এবার লিচুর সঙ্গে সমপ্রতিযোগী হয়ে উঠেছে আম।
লিচুর পাশাপাশি আমগাছ জুড়ে দেখা দিয়েছে থোকায় থোকায় আম। বর্তমানে চারপাশের লিচু ও আমগাছের পাতা ঢাকা পড়েছে রসলো লিচু ও আমের ভারে। এবার উপজেলার লিচু ও আমের গাছ গুলোতে লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আত্রাইয়ে লিচুর বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন কৃষি অধিদফতর।
আম-লিচুগাছে ব্যাপক আকারে ফল দেখা দেওয়ার আগ থেকে ফলন ভালো পাওয়ার আশায় পরিচর্যা শুরু করেছেন স্থানীয় বাগানি ও চাষিরা। খড়া মৌসুমে বৃষ্টিপাত দেখা না দেওয়ায় সেচের মাধ্যমে লিচু-আমগাছের গড়ায় পানি সরবরাহ করছেন তারা। কোনো ধরনের ছত্রাক বা রোগে আক্রান্ত না হয় এজন্য কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিচ্ছেন স্থানীয় লিচু-আম চাষিরা। আগামিতে ফলন উঠা পর্যন্ত গাছ ও ফলের পরিচর্যা কাজ চালিয়ে যাবেন তারা। ম
এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের লিচু চাষি মো. বাবু খন্দকার জানান, পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগ-বালাই থেকে গাছ ও লিচুর গুটিকে মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে বালাইনাশক। গত দুই সপ্তাহের বৃষ্টিপাতের কারণে ঠিক মতো বালাইনাশক দেওয়া সম্ভব হয়নি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী বালাইনাশক দেওয়া হচ্ছে।
নাটোর থেকে আগত মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর লিচুর মৌসুমে আত্রাইয়ে আসেন। এবার লিচুর ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি, সব ঠিক থাকলে এবছর বাণিজ্য ভালো হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন জানান, আত্রাই উপজেলাতে তেমন একটা লিচু উৎপাদন হয়না। তবে এখন দিন দিন লিচুর গাছ বাড়ছে। আমরা মুকুল ধরা থেকে ফল আসা ও ফল উঠা পর্যন্ত সব ধরনের পরিচর্যা কাজে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সহযোগিতা করবেন। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে এবার আমের পাশাপাশি লিচুর ফলন হবে।