Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

আটজনের কাছে বিক্রি, তিনজন করতেন ধর্ষণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০১৯, ০৬:০৯ PM
আপডেট: ১২ মে ২০১৯, ০৬:০৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ২০১৪ সালে ইরাকের ইয়াজিদি গ্রামগুলোর দখল নেয়। সেসময় তারা ছয় হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে বন্দী করে। যাদের মধ্যে ছিলেন মরিয়ম ও তার মা। 

চার বছর ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হাতে বন্দী থাকা মরিয়ম তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বিবিসির কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, তারা আমার শরীরে বিস্ফোরক লাগানো একটি আত্মঘাতী পোশাক পড়ায়। তারপর বলে ট্রিগার চেপে দিতে।

মরিয়ম বলেন, ‘আইএস যখন আমাকে বন্দী করে তখন আমার বয়স ১২ বছর। আমাকে আটজনের কাছে বিক্রি করা হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে তিনজন আমাকে নিয়মিত ধর্ষণ করত আর বাকিরা দাসী হিসেবে ব্যবহার করত।

আইএস জঙ্গিদের হাতে বন্দী থাকা অবস্থায় কথা বলায় সমস্যা তৈরি হয় মরিয়মের। তাকে তার মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়।

মারিয়াম বলেন, ধরা পড়ার আগে আমার কথা বলতে কোনো সমস্যা হতো না। বন্দী থাকা অবস্থাতে এই সমস্যা শুরু হয়। আমি বহুবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরে মায়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি।

মরিয়মের বলেন, বন্দী থাকা অবস্থায় মায়ের সঙ্গে একবার আমার দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। তখন আমি মাকে প্রতিশ্রুতি দেই যে কখনওই আত্মহত্যার চেষ্টা করব না। আইএসের সেই বন্দিশালা থেকে মরিয়ম পালিয়ে আসতে পারলেও তার মায়ের এখনও কোনো খোঁজ নেই।

মরিয়ম ও তার মায়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সেই দুর্বিষহ স্মৃতি এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় মরিয়মের বাবাকে। তিনি বলেন, এমন যদি হতো যে আমার মৃত্যু হলে মরিয়মের মা ফিরে আসত, তাহলে আমার জন্য সে মৃত্যুই ভালো হতো।

মরিয়াম বাবা আরও বলেন, মরিয়মকে আমি বলি যেন সে ওই সময়ের (বন্দী থাকাকালীন সময়ের) স্মৃতি ভুলে যায়। সেসব স্মৃতি যত মনে করবে, ততই তার মানসিক কষ্ট বাড়বে।’তবে বাবার সেসব কথা মরিয়মের অতীতের দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে সাহায্য করে না।

প্রসঙ্গত, ইরাকে মরিয়মের মত অনেক নারী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় জীবনযাপন করেন। প্রায় চার দশক ধরে একের পর এক সহিংস ঘটনার প্রভাব পড়েছে দেশটির মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর।

গত ৪০ বছরে ইরাকে তিনটি বড় পরিসরের যুদ্ধ, একটি সামরিক অভ্যুত্থান ছাড়াও তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের দুটি অভ্যুত্থান এবং সশস্ত্র জঙ্গিদের সঙ্গে সরকার সমর্থিত বাহিনীর গৃহযুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও ইরাকে প্রায় এক দশক ধরে চলেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিমান হামলা।

Bootstrap Image Preview