ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার সময় যে গ্লাসে করে তার গায়ে কেরোসিন ছিটানো হয়েছিল সেটি উদ্ধার করা হয়েছে।
মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অধ্যক্ষের দপ্তরের সামনের ওয়াল কেবিনেটের ভেতর থেকে বুধবার রাতে গ্লাসটি উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্লাসটি মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।
রিমান্ডে থাকা আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন ও যোবায়ের আহমেদকে নিয়ে রাতে ওই গ্লাস উদ্ধারে অভিযানে যায় পিবিআই। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই আসামিরা নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় কেরাসিন ছিটানোর জন্য একটি গ্লাস ব্যবহার করার কথা বলেছিল। এর ভিত্তিতেই তাদের নিয়ে রাতে মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হয়।
ফেনীর সোনাগাজীর মেয়ে নুসরাত এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী ছিলেন তিনি। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগ এনে গত মার্চে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা করে নুসরাতের পরিবার। সেই মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ। অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনী সদর হাসপাতালে এবং পরে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাতের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ৮ এপ্রিল তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় এবং ১০ এপ্রিল রাতে মারা সে যায়।
নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পর তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়, যার তদন্ত করছে পিবিআই।