ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে প্রবাসী সবুজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আদম ব্যবসায়ী নেওয়াজের ওপর হামলা চালিয়ে দুই পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। পূর্ব শক্রতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেতে পারে বলে জানিয়েছে পাগলা থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ মে) ভোরে উপজেলার পাগলা থানার পাঁচবাগ ইউনিয়নের চৌকা গ্রামে সবুজ হত্যা মামলার বাদী সবুজের পিতা শহীদ মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী সবুজ হত্যা মামলার আসামি উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের ঝাওয়াইল গ্রামের আদম ব্যবসায়ী নেওয়াজ দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। গত ২/৩ দিন পূর্বে সে গোপনে বাড়িতে আসে। মঙ্গলবার ভোরে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে রিকশা করে হোসেনপুর যাওয়ার সময় ভোর ৫টার দিকে চৌকা গ্রামে শহীদের বাড়ির সামনে এলে একদল লোক আলী নেওয়াজেরে ওপর হামলা চালায়। হামলায় রামদা দিয়ে কুপিয়ে আলী নেওয়াজের দুই পা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
পরে এলাকাবাসী আলী নেওয়াজকে উদ্ধার করে প্রথমে হোসেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে মাইক্রেবাসে করে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়। তবে তিনি কোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন নি।
পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় শহীদ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেন নি।
প্রসঙ্গত, উপজেলার পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ চৌকা গ্রামের শহিদ মিয়ার সঙ্গে বিদেশ পাঠানোর টাকা নিয়ে তাদের বিবাদ ছিল। গত ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে আলী নেওয়াজ ও তার ভাড়াটিয়া লোকজন গফরগাঁও থানার তেতুলিয়া গ্রামের মোড়ল বাড়ি এলাকায় শহীদ মিয়ার পরিবারের লোকজনের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা শহীদ মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়াকে রামদা দিয়ে এলাপাথারী কুপিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে দেয়।
ঘটনার ৫ মাস পর ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ পুলিশের পিআইবি শাখা পাঁচপাই বাজার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সবুজ মিয়ার ক্ষত বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।
সবুজ মিয়ার পিতা ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতেই পাঁচবাগ ইউপির সদস্য জিতু মেম্বার, পাঁচবাগ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম জহির , ছাত্রলীগ নেতা স্বপন মিয়া, আদম বেপারী আলী নেওয়াজসহ ৬ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আরও ১২/১৩ জনকে আসামি করে গফরগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন।
ঘটনার পর আলী নেওয়াজসহ চারজন আসামি গ্রেফতার হলেও পরে তার জামিন পায়। সবুজের লাশ উদ্ধার হওয়ার পর আসামিরা আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় আলী নেওয়াজসহ এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।