বিভিন্ন বিত্তশালী ব্যবসায়ীদেরকে অপহরণ করে আপত্তিকর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে মুক্তিপণ আদায় করাই তাদের কাজ। এমন চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মো।নাসির উদ্দিন (৩৫), প্রদীপ দাশ (৩৫), হাসিনা আক্তার ওরফে মুক্তা (৪৫), ও ছালেহা আক্তার (৪০)। এ সময় তাদের হেফাজত হতে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত ০৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
০৬ মে, ২০১৯ দুপুরে কোতোয়ালী থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, আলতাফ হোসেন (৫০) চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানাধীন আসাদগঞ্জ এলাকার একজন সুনামধন্য ব্যবসায়ী। তিনি ০৬ মে, ২০১৯ অনুমান ১০টায় তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হতে চাঁন্দগাও থানাধীন বহাদ্দারহাট এলাকায় যাওয়ার পথে অপহরণ করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। ঐ দিনই অনুমান ১১টায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তার ছোট ভাই ও ভাতিজাকে ফোন দিয়ে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলে অপহরণকারীরা। টাকা না দিলে তার ভাইয়ের আপত্তিকর ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়াসহ মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করা হয়।
ভূক্তভোগীর ছোট ভাই বিষয়টি দ্রুত কোতোয়ালী থানা পুলিশকে জানায়। থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে হাসিনা আক্তার ওরফে মুক্তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে অন্যান্যদের গ্রেফতার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালী থানা সূত্রে জানা যায়, অপহরণকারীরা চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় বিভিন্ন বিত্তশালী ব্যবসায়ীদেরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করত। তাদের মধ্যে দুইজন স্বামী-স্ত্রী’র পরিচয় দিয়ে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তারা স্বামী-স্ত্রী নয়। কোন বাসায় তারা ২/৩ মাসের বেশি অবস্থান করত না। এ চক্রের অন্যান্য পুরুষ সদস্যরা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বিভিন্ন বিত্তশালী, ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবী লোকদের মোবাইল নম্বরসহ তথ্য সংগ্রহ করত। এরপর সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে উক্ত লোকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে সুসম্পর্ক তৈরি করত এবং উক্ত ব্যক্তির গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করত। টার্গেটকৃত ব্যক্তির গতিবিধি লক্ষ্য করে সুবিধাজনক জায়গা হতে নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে অপহরণ করে তাদের বাসায় নিয়ে যেত। এরপর চক্রের মহিলা সদস্যদেরকে দিয়ে অপহৃত ব্যক্তির সাথে আপত্তিকর ছবি ধারণ করত। উক্ত আপত্তিকর ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে অপহৃত ব্যক্তির নিকট হতে মুক্তিপণ আদায় করত।
এ সংক্রান্তে তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।