বাগেরহাটের শরণখোলায় পাওনা টাকা না পেয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় দুই দিন ধরে পায়ে শিকলে বেঁধে ইসমাইল হোসেন খাঁন (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতন অভিযোগ পাওয়া গিয়েছি। নির্যাতন অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতার দিকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার বিকালে আহত ওই ব্যক্তিকে পশ্চিমখাদা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা কালাম বয়াতীর বাড়ি থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় ইসমাইল হোসেন খাঁনকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এঘটনায় নির্যাতনের শিকার ইসমাইল হোসেন খাঁন বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় আওয়ামী লীগ নেতা কালাম বয়াতীসহ তিন জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। কালাম বয়াতী শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
সোমবার রাতে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ইসমাইল জানান, টাকা আদায়ের জন্য শালিস বৈঠকের কথা বলে কৌশলে তাকে বাংলাবাজার এলাকায় ডেকে আনা হয়। সাত হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও এক পর্যায়ে ওই বাজারের জনসম্মুখে কামালের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা ইসমাইলকে ব্যাপক মারপিট করে এবং তার দাঁড়ির কিছু অংশ তুলে নেয়। এসময় ঘটনাস্থলে অনেকেই দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে ইসমাইল হোসেনের পায়ে শিকল দিয়ে দোকান ঘরের খুঁটির সঙ্গে দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা বেঁধে রাখে। পরে সেখান থেকে নিয়ে কামাল বয়াতীর বসত বাড়ি একটি কক্ষে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। দুই দিন পরে পুলিশ খবর পেয়ে উদ্ধার করতে গেলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ইসমাইলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে। হাসপাতালেও তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, ‘শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন একটি অমানবিক ঘটনা। এমন কাজ কখনই ঠিক হয়নি।’
মামলা দায়েরের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা কালাম বয়াতী পলাতক রয়েছেন। ফলে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার জানান, তার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।