ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মহান মে দিবস হচ্ছে মানুষে মানুষে বৈষম্য কিংবা শিল্পমালিকদের শোষণের বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির ঐক্যবদ্ধ একটি সংগ্রামের বিজয়। বৈষম্য দূর করতে হলে আয়ের সমতা হওয়া উচিত। প্রত্যেকটা মানুষের অধিকারের সমতা হওয়া উচিত এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা প্রাপ্তিরক্ষেত্রে প্রত্যেক মানুষের সমান সুবিধা থাকা উচিত।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ডাক অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে মহান মে দিবস উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আমেরিকার শিকাগোর হে মার্কেটে ১৮৮৬ সালে শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, শ্রমিকদে ঘাম শোষণ না করলে মালিকদের অট্রালিকা, বিলাস বৈভব হতো না। সমাজতন্ত্রের ধারণাটিই ছিল এই বৈষম্য ভাঙ্গার জন্য। পৃথিবী জুড়ে তারুণ্যের একটি বড় অংশ এই বৈষম্য-শোষণ–অবিচার দূর করার পক্ষে কাজ করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপ থেকে দেশটি গড়ে তোলার পাশাপাশি শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন উল্লেখ করেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সংবিধানের চার মূলনীতির মধ্যে বঙ্গবন্ধু সমাজতন্ত্র সন্নিবেশিত করেছিলেন। দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধুর ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি ও সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদের উদ্যোগ এবং সম্পদের সুষম বন্টনে দ্বিতীয় বিপ্লবের গৃহীত কর্মসূচি দারিদ্র বিমোচনের রেপ্লিকা হিসেবে বিশ্ব আজ এসডিজিকে দেখতে পাচ্ছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাদী কিংবা মুক্তবাজার অর্থনীতি কাঠামোতে রাষ্ট্রের মালিকানা সমাজের ধনিক শ্রেণির হাতে থাকে। সাধারণ মানুষ-শ্রমিক-কৃষককে তাদের সেবাদাস হিসেবে থাকতে হয়। এই কারণে বৈষম্য দিনে দিনে বাড়ে, প্রতিদিন, প্রতিমূহুর্তে বাড়তে থাকে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এবং ডাক বিভাগের মহাপরিচালক এসএস ভদ্র বক্তৃতা করেন। মন্ত্রী মহান মে দিবস ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তর প্রকাশিত ১০ টাকা মূল্যমানের একটি বিশেষ খাম অবমুক্ত করেন। এই বিষয়ে একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়েছে। ডাক অধিদপ্তর এই প্রথমবারের মতো মে দিবস উপলক্ষে বিশেষ খাম প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিটকে জীবন্ত জাদুঘর আখ্যায়িত করে বলেন, এই ধরণের প্রকাশনা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।