Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ রবিবার, মে ২০২৫ | ২১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

এবার সিক্স প্যাক বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন মিজানুর আজহারি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:৩২ PM
আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সম্প্রতি বেশ কয়েকদিন ধরে সিক্স প্যাক বিতর্ক নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে। মিজানুর রহমান আজহারি তার ফেসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তায় এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

মিজানুর রহমান আজহারি তার ফেসবুক পেইজে লিখেছেন,

“ইনশাআল্লাহ, অচিরেই সিক্স প্যাক বিতর্ক ও উম্মি নবী প্রসংগে আমার ক্লারিফিকেইশন আপনাদের সাথে শেয়ার করব। পূর্ণ ভিডিওটি ৭ এপ্রিল রোজ রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টায় রিলিজ করা হবে। অনুগ্রহ করে স্ট্যাটাসটি সবাই শেয়ার করুন।”

জীবনে উন্নতি লাভ কি পরীক্ষা না অনুগ্রহ? আর এ দুয়ের মাঝে পার্থক্য কি?

এই কয়েকটি আয়াত হলো সূরা ফজরের কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয়। আল্লাহ বলেন – فَأَمَّا الْإِنسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ – ” মানুষ এরূপ যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর সম্মান ও অনুগ্রহ দান করেন, তখন বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে সম্মান দান করেছেন।”

আল্লাহ এখানে বলছেন তিনি মানুষকে সম্মান এবং অনুগ্রহ প্রদান করার মাধ্যমে পরীক্ষা করেন। এখানে তিনি ‘আনআমাহু’ বলেন নি, তিনি বলেছেন – نَعَّمَهُ অর্থাৎ তিনি বার বার দিতে থাকেন। তিনি তার জীবনকে ক্রমান্বয়ে উন্নত করতে থাকেন। তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আল্লাহ একজন মানুষকে দুইভাবে সমৃদ্ধি দান করেন। প্রথমত, তিনি তাকে সম্মান দান করেন। ফলে আপনি দেখতে পান সমাজে হঠাৎ করেই কারো কারো সম্মান বেড়ে যায়। কারো করো ভার্সিটি থেকে ডিগ্রি অর্জন করলে সম্মান বেড়ে যায়। আবার কেউ ভালো কোন চাকরি পেলেও সমাজে তার সম্মান বেড়ে যায়।

এখন প্রশ্ন হল কেউ সম্মান অর্জন করার পর যদি বলে, “আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন” তাহলে এখানে সমস্যা কোথায়? কিন্তু এই আয়াতে এই কথাটি সমালোচনামূলক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে সমালোচনাটি হলো, “আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন” এই কথা বলে আপনি থেমে যেতে পারেন না। আপনাকে বলতে হবে আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন, আর এই সম্মানিত করার মাধ্যমে তিনি আমাকে পরীক্ষা করছেন।

আয়াতের ভাষা ছিল, ” যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন।” আর সেই পরীক্ষার অংশ হিসেবে তিনি তাকে সম্মান দান করেন এবং অবিরাম নেয়ামত দান করতে থাকেন। এখন বান্দা কীভাবে সাড়া দেয়? বান্দা শুধু নিজের উন্নতিই দেখতে পায়। আল্লাহ যে তাকে পরীক্ষাও করছেন সেই ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে সে ব্যর্থ হয়।

এখন, পরীক্ষা বা অনুগ্রহ মনে করার মাঝে পার্থক্যটা কোথায়?

আপনি যদি এটাকে আপনার প্রতি আল্লাহর সম্মান ও অনুগ্রহ মনে করেন এবং পরীক্ষা মনে না করেন তাহলে আপনি ভাববেন – “আল্লাহর কাছে আমি মনে হয় অনেক ভালো তাই তিনি আমাকে এতোসব নেয়ামত দান করছেন। আল্লাহ আমাকে সম্মান দান করেছেন কারণ আমি নিশ্চয়ই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। আল্লাহ অনেক ভালো।” জীবনে উন্নতি করলে খ্রিস্টানরা যেভাবে বলে – Lord is kind, things are good. (আল্লাহ দয়ালু, কারণ জীবন ভালো যাচ্ছে।)

কিন্তু এটা যেহেতু পরীক্ষা, আল্লাহ দেখতে চান আপনি এই সম্মান এবং নেয়ামত পাওয়ার পর কী করেন? আপনি কি অন্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন? আপনাকে যে অর্থ-সম্পত্তি দেয়া হয়েছে আপনি কি তা আত্মীয়স্বজন এবং গরিব দুঃখীদের জন্য ব্যয় করেন? আপনি কি পূর্ববর্তী জাতিদের মত মনে করেন যে, আমরা এইসব সম্মান এবং নেয়ামত পাওয়ার যোগ্য তাই আমাদেরকে দেয়া হয়েছে? কুরাইশরাও গরিব মিসকিনদের একই ধরণের কথা বলত – أَنُطْعِمُ مَن لَّوْ يَشَاءُ اللَّهُ أَطْعَمَهُ – “ইচ্ছা করলেই আল্লাহ যাকে খাওয়াতে পারতেন, আমরা তাকে কেন খাওয়াব? ” (৩৬:৪৭) ‘আল্লাহ চেয়েছেন আমরা ধনী হব তাই আমরা ধনী। আল্লাহ তাদের জন্য চাননি তাই তারা ধনী নয়। আমরা তাদেরকে গরিব বানাইনি, এটা আমাদের দোষ নয়।’

তাই এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের শেখাচ্ছেন – হ্যাঁ, আমি আপনি এই দুনিয়াতে আল্লাহর অনুগ্রহ উপভোগ করবো। আমরা চাকরিতে প্রমোশন পাবো, উন্নত শিক্ষা পাবো, ভালো চাকরি পাবো বা অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করবো। এগুলো জীবনে ঘটবে। কিন্তু এগুলোকে যদি শুধু আল্লাহর অনুগ্রহ মনে করি তাহলে আমরা বিরাট ভুল করবো। এগুলো শুধু সম্মান আর অনুগ্রহ নয়, বরং এই সম্মান ও অনুগ্রহ প্রদান করার মাধ্যমে আমাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর এই পরীক্ষার ফলাফল দেখা যাবে আখিরাতে।

উস্তাদ নোমান আলী খানের সূরা ফজরের আলোচনা থেকে অনুপ্রাণিত।

Bootstrap Image Preview