পাকিস্তানে ভারতের হামলা চালানোর আগে ও পরে মিয়ানমারে হামলা চালায় ভারত। ‘অপারেশন সানরাইস’ নামে এই অভিযানে ভারতীয় সেনার সঙ্গে ছিল মিয়ানমারের সেনারাও। প্রথম অভিযানটি চালানো হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি, আর দ্বিতীয়টি ২ মার্চ।
আনন্দবাজারের সংবাদে বলা হয়েছে, ওই অভিযানে ১০টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরাকান আর্মিদের তত্পরতা বাড়ছিল। এই আরাকান আর্মি মিয়ানমারের সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী। মিজোরাম ও মিয়ানমার সীমান্তের ঘাঁটি থেকেই জঙ্গি কার্যকলাপ চালাচ্ছিল আরাকান আর্মি।
ওই জঙ্গিগোষ্ঠী কালাদান প্রকল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার পরই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় সেনা। দুটো পর্যায়ে অভিযান চালানো হয়। প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য ছিল মিয়ানমার-মিজোরাম সীমান্তে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোকে ধ্বংস করা। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযানের লক্ষ্য ছিল নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং)-এর ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া। সেনার স্পেশাল ফোর্স, অসম রাইফেলসের সঙ্গে মিয়ানমার সেনা এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। ড্রোন, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জঙ্গিদের গতিবিধি নজর রাখা হচ্ছিল। জঙ্গিদের খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করার পরই হামলা চালানো হয়।
সেনা সূত্র বলছে, চীন সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে গত দু’বছর ধরে আরাকান আর্মিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি। প্রায় ৩ হাজার ক্যাডারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তার পর তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় মিয়ানমারের দক্ষিণ সীমান্তে। সেখান থেকেই ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালাত আরাকান আর্মির সদস্যরা। জঙ্গিদের মদত দেওয়ার পিছনে চীনের হাত রয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।
কালাদান প্রকল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে আরাকান জঙ্গিরা, গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসার পরই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সেনা। ভারত ও মায়ানমার, দুই দেশের ক্ষেত্রেই কালাদান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মিয়ানমারের সিতে বন্দরের সঙ্গে মিজোরাম হয়ে কলকাতা সংযুক্ত হবে। এই প্রকল্প চালু হলে কলকাতার থেকে মিজোরামের দূরত্ব প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার কমে যাবে।
এর আগে ২০১৭-য় ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে অভিযান চালায় ভারতীয় সেনার প্যারা-কম্যান্ডো বাহিনী। ওই অভিযানে নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং)-এর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছিল।