Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ বুধবার, মে ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজিমপুর কবরস্থানেই শেষবারের মতো মেয়েকে শুইয়ে দিচ্ছেন বাবা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৬:০৩ PM
আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৬:০৩ PM

bdmorning Image Preview


মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে বসে আছেন চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া কলেজছাত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা ওরফে বৃষ্টির বাবা ও মা। তাদের দু’চোখ ভরা জল। মর্গে পড়ে থাকা আদরের সন্তান বৃষ্টির ক্ষতবিক্ষত লাশটা ফিরে পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতে পেতে তাদের এ অপেক্ষা। সকালে সিআইডি কার্যালয় থেকে টেলিফোন করে তাদের ডেকে আনা হয়েছে।

বৃষ্টির বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চুড়িহাট্টা নন্দগোপাল রোডের ভিডিও ফুটেজে মেয়েকে রিকশায় দেখে তিনিসহ পরিবারের সবাই প্রায় নিশ্চিত হয়েছিলেন যে তাদের আদরের বৃষ্টি আর নেই। তবে লাশ পুড়ে বিকৃত হওয়ায় তারা পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেননি। এ কারণে সিআইডির কাছে ডিএনএ নমুনা দিয়ে যান। ডিএনএ পরীক্ষায় বৃষ্টির লাশটি আজ (৬ মার্চ) চিহ্নিত হয়।

জসিম উদ্দিন জানান, মেয়ের শেষ নিশানাটুকু আজিমপুর গোরস্থানেই দাফন করতে চান। তিনি জানান, বাসা ও ব্যবসা এ এলাকায় হওয়ায় আদরের মেয়েকে আজিমপুর কবরস্থানেই শেষবারের মতো শুইয়ে দিতে চান। বেলা সাড়ে ৩টার মধ্যে কাগজপত্র বুঝে পাবেন বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মেয়ের মৃত্যুকে তিনিসহ পরিবারের অন্যরা নিয়তি বলে মেনে নিলেও তার মা মেনে নিতে পারছে না। মেয়ের সঙ্গে কাটানো হাজারও স্মৃতি স্ত্রীকে তাড়া করে ফিরছে।

তিনি জানান, লালবাগ পোস্তার রহিম বক্স লেনের বাসার একটি ছোট্ট কক্ষে সর্বত্র বৃষ্টির স্মৃতিচিহ্ন। তার শোয়ার খাট, বইপত্র, কসমেটিকস ও শখের গিটার পড়ে আছে। দেয়ালে তাকালেই মেয়ের আঁকা আল্পনা দেখতে পান। কক্ষটি নিজের মতো করে সাজিয়েছিল বৃষ্টি।

সম্প্রতি ওই বাসায় গেলে বৃষ্টির দাদি জানান, সেদিন একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ঘনিষ্ঠ বান্ধবী দোলাকে নিয়ে বাইরে গিয়েছিল বৃষ্টি। রাত ৯টার পরও বাসায় ফোন করে চিন্তা না করতে এবং খুব তাড়াতাড়ি ফিরবে বলে জানায়। তবে গভীর রাতে বাসায় না ফেরায় ও চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তারা ছুটে যান সেখানে।

সকালে অনেক লাশ পাওয়া গেলেও বৃষ্টির লাশ খুঁজে পাননি তারা। পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখেন ঘটনার সময় বৃষ্টি আর দোলা ওই এলাকায় অবস্থান করছিলেন। তাদের মোবাইলের সর্বশেষ লোকেশনও সেখানে দেখা যায়। এতেই তারা প্রায় নিশ্চিত বৃষ্টি বা দোলা বেঁচে নেই।

ওইদিন বৃষ্টির মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, মেয়ের শেষ নিশানাটুকু ফিরে পেতে চান। আজ ডিএনএর প্রতিবেদনে তার লাশটি শনাক্ত হয়।

Bootstrap Image Preview