Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ মঙ্গলবার, জুন ২০২৫ | ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শেখ হাসিনা চব্বিশ ঘণ্টা অজুসহ পবিত্র থাকেন: তাপস

ইলিয়াস শান্ত, তিতুমীর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০১৯, ০২:১২ PM
আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯, ০২:১২ PM

bdmorning Image Preview


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ ঘণ্টা অজুসহ পবিত্র অবস্থায় থাকেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সাথে সাথে কুরআন তেলাওয়াত করা তার প্রধান কাজ বলে জানিয়েছেন শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি।

শুক্রবার (০১ মার্চ) বিকেল ৩ ঘটিকার সময় কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে ইমাম-ওলামা ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ক্বিরাত ও ইসলামী মহাসম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সংগঠনের মহাসচিব ক্বারী লিয়াকত হোসাইনের উপস্থাপনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ধর্মপ্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। কলাবাগান ১০ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। জি.এম.এস কম্পোজিট লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। আব্দুল মোনেম গ্রুপের ডি.এম.ডি মাঈন উদ্দিন মোনেম। তেপান্তর গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ এরশাদুল্লাহ চৌধুরী। সারা বিল্ডার্স ও সারা পয়েন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এ.কে.এম ওয়াহিদুর রহমান প্রমুখ।

এছাড়া সম্মলনে দেশ বরেণ্য ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অন্যান্য আমন্ত্রিত ওলামা-মাশায়েখদের মধ্যে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যা বাংলাদেশের মহাসচিব আব্দুল কুদ্দুস। পীর সাহেব চরমোনাইয়ের আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমসহ আরো অনেকে বক্তব্য পেশ করেন।

আমন্ত্রিত ওলামা-মাশায়েখদের বক্তব্যে বক্তারা মুসলিম জাতির গৌরব, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, এ দেশের মাটি পীর আওলীয়ার ঘাটি। মুসলিম জাতি ধর্মীয়ভাবে অতীতেও যেমন শ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসেবে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গিয়েছে, ভবিষ্যতেও শান্তি কামনায় কাজ করে যাবে। গবগঠিত ইমাম-ওলামা ঐক্য পরিষদের মহাসচিব ক্বারী লিয়াকত হোসাইন তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্যেশ্য ও বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। ইমাম-মোয়াজ্জিনের যেকোন ধরনের অবহেলা, লাঞ্চনায় একে অপরের পাশে থাকার শক্ত প্লাটফর্ম হিসেবে নবগঠিত সংগঠনের নাম উচ্চারণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নবগঠিত ইমাম-ওলামা ঐক্য পরিষদের এমন আয়োজনকে ইসলামের বিশেষ সেবা উল্লেখ করে বলেন, আমরা মানুষ মাঝে মাঝে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ভুলে যাই, মূলত আমাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালার ভয়-ভীতির কথা, আল্লাহকে চেনা জানার জন্য এমন মজলিশে আমরা আসি।

মন্ত্রী তার বক্তব্যে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এদেশে উত্থাপিত সকল ধরনের নাশকতা বা সন্ত্রাসবাদের শক্তহাতে দমন করা হয়েছে। তিনি এসব সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে সকলকে সতর্ক থেকে জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস অনুষ্ঠানের এক ওলামার পবিত্রতা নিয়ে বক্তব্যের সূত্র থেকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ ঘণ্টা অজুসহ পবিত্র অবস্থায় থাকেন।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ পূণ্যের কাজের চিত্র তুলে ধরে তাপস আরো বলেন, তিনি নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজসহ দিনে রাতে ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরীফেরও তেলাওয়াত করেন।

ওলামা-মাশায়েখদের উত্থাপিত সকল সমস্যার সমাধানের কথা তুলে ধরে তাপস বলেন, দেশের কোথাও ইমাম-মোয়াজ্জিন খারাপ অবস্থানে নেই। তবুও কিছু কিছু সমস্যা এখনো রয়েগেছে। শেখ হাসিনার এ মেয়াদের সরকারে সবকিছুর সমাধান করে দিবেন। যেকোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতায় দেশের ইমাম-মোয়াজ্জিনের পাশে দাড়ানোর কথাও তার বক্তব্যে উঠে আসে।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বা কওমী শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্ন অবস্থান তুলে ধরে মন্ত্রী আরো বলেন, আগে জনসাধারণের একটা ভ্রান্ত ধারণা ছিলো। মাদ্রাসায় পড়লে শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যায়। অথচ এসব ধারণা ভুল প্রমাণ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কওমী শিক্ষার্থীরা সনদ পাচ্ছে এবং তারা সঠিক ও নীতিগত শিক্ষার জন্য যোগ্য শিক্ষক পাচ্ছে। এসবের স্বীকৃতি স্বরুপ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কওমী বোর্ড থেকে পাওয়া ‘কওমী জননী’ উপাধির বিষয়টিও তুলে ধরেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ কলরব শিল্পী গোষ্ঠীর পরিবেশনায় মাঝে মাঝে বিশেষ হামদ-নাত ও কোরআন পাঠ করা হয়। শ্রোতাদের দৃষ্টিগোচর এমন পরিবেশনা উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করেছে।

কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে ইমাম-ওলামা ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ইসলামী সম্মেলনে রাজধানীর উত্তরা থেকে আশা এক শ্রোতার কাছ থেকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিডিমর্নিংকে জানান, আমরা ছোট থাকতে যখন গ্রামগঞ্জে ছিলাম তখন এরকম প্যান্ডেল করে ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন দেখেছি। রাজধানীতে এরকম আয়োজন খুব একটা দেখি না। যখন আমি আজকে কলাবাগানে এরকম আয়োজনের কথা শুনেছি তখন না এসে আর থাকতে পারলাম না।

মাঝে মাঝে এরকম আরো সম্মেলন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইসলামী বিধিবিধান জানা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা এসব আয়োজন থেকে ধর্মীয় নানা বিষয় শিখতে পারি।

মদীনাতুল উলূম মডেল ইনিস্টিটিউট বালক কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের মোনাজাত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মোনাজাতে মুসলিম জাতির হেদায়েতের জন্যেও বিশেষ দোয়া করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview