১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পর নতুন করে আর কোনও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে একথা জানান তিনি।
এদিকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। গত ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে নানা জটিলতায় এখন পর্যন্ত প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।
শহিদুল হক বলেন, আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদকে জানাতে চাই যে বাংলাদেশ আর কোনও রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া মতো অবস্থায় নেই।’ তিনি বলেন, মিয়ানমার শুধু মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছে এবং অনেক প্রতিবন্ধকতা সামনে হাজির করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিচ্ছে। পররাষ্ট্রসচিব বলেন, একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি কারণ সেখানে তাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়নি।
অন্যদিকে মিয়ানমারের দাবি, গত জানুয়ারি থেকেই তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত। তবে রোহিঙ্গারা জানান, নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা না পেলে সেখানে যাবেন না তারা।
জাতিসংঘেরও পর্যবেক্ষণ, মিয়ানমারে এখনও রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়নি। জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ক্যারেন পিয়ার্স বলেন, ‘আমরা খুবই হতাশ যে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি।’ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছামূলক ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের নিশ্চয়তার ওপর জোর দেন।
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ দূত ক্রিস্টিন স্ক্রানার বার্জনার নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের প্রবেশাধিকার সীমিত। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের ঘটনা এখন পর্যন্ত এই শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা।
তবে এই সংকটটি কিভাবে সমধান করা যায় তা নিয়ে বিভক্ত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। পশ্চিমা দেশগুলো ও মিয়ানমারের মিত্র রাশিয়া ও চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে। চীনের উপজাতিসংঘ দূত উ হাইতাও বলেন, এটা মূলত মিয়ানমার ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। তাদেরই এটা সমাধান করতে দেওয়া উচিত। তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন রাশিয়ার দূত দিমিত্রি পোলান্স্কিও।