Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ বুধবার, মে ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

হামলার আগের ১১ দিন যেসব পরিকল্পনা করেছিল ভারত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫৩ PM
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কাশ্মীরের পুলওয়ামার গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হামলার পর থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে। ঐ ঘটনার পর পাকিস্তানকে সময় মতো সমুচিত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রেখেছিল ভারত। অন্যদিকে, আক্রান্ত হলে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকেও নয়া দিল্লিকে দেখে নেওয়ার পাল্টা হুমকি আসছিল।

এসব হুমকির মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। মঙ্গলবার ভোরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে বোমাবর্ষণ করে ভারতীয় যুদ্ধবিমান। তাতে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের একাধিক ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভারতরে পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

তবে রাতারাতি এই অভিযান চালানো হয়নি। বরং প্রস্তুতি চলেছে গত ১১ দিন ধরে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।

জানা যায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। তাতে মৃত্যু হয় ৪৪ সেনার। প্রাথমিকভাবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পরই পাকিস্তানে হামলার কাজ শুরু হয়।

এর আগে ২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় সেনা। তবে এবার পরিকল্পনা ছিল আকাশপথে বোমাবর্ষণের। সেই মতো প্রেজেন্টেশন দেন বিমান বাহিনীর প্রধান বিএস ধানোয়া। ওই দিনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে তাতে অনুমোদন মেলে।

১৬-২০ ফেব্রুয়ারি
নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নজরদারি চালাতে নামানো হয় হেরন ড্রোন। তার মাধ্যমে টানা পাঁচদিন ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গিদের গতিবিধি এবং কার্যকলাপের উপর নজর রাখা হয়।

২০-২২ ফেব্রুয়ারি
ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারির পর কোন কোন জায়গাগুলোকে টার্গেট করা যায়, যৌথভাবে সেগুলোকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে বিমানবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

২১ ফেব্রুয়ারি
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা ও গোয়েন্দারা। কোন পথে কোথায় অভিযান চালানো হবে, ডোভালের সামনে সবিস্তার তথ্য তুলে ধরা হয়।

২২ ফেব্রুয়ারি
জরুরি পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণ এবং স্ট্রাইক চালাতে বিমানবাহিনীর ১ নম্বর স্কোয়াড্রন ‘টাইগারস’ এবং ৭ নম্বর স্কোয়াড্রন ‘ব্যাটল অ্যাক্সেস’র সাহায্য নেওয়া হয়। মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে বিমানবাহিনীর ওই ঘাঁটিতে খবর দেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অভিযান চালাতে প্রস্তুত রাখতে বলা হয় ১২টি ‘মিরাজ ২০০০’ যুদ্ধবিমান।

২৪ ফেব্রুয়ারি
সবকিছু ঠিক আছে কিনা দেখতে ভারতের আকাশেই মহড়া দেওয়া হয়। মাঝআকাশে যদি বিপত্তি দেখা দেয়, সে জন্য আগরা থেকে বিশেষ জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান উড়িয়ে আনা হয়।

২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি
ভোর সাড়ে ৩টা নাগাদ অভিযান শুরু হয়। গ্বালিয়র থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা অভিমুখে রওনা দেয় লেজার নিয়ন্ত্রিত বোমা বোঝাই ১২টি ‘মিরাজ ২০০০’ যুদ্ধবিমান। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ভাটিন্ডা থেকে একটি বিমান রওনা দেয়। আগরা থেকে রওনা দেয় মাঝআকাশে জ্বালানি সরবরাহকারী বিশেষ বিমান। গোপন জায়গা থেকে নজরদারি চালাতে পাঠানো হয় হেরন ড্রোন।

লক্ষ্যে আঘাত হানতে কোন বাধা নেই, কম্যান্ড সেন্টার থেকে এই বার্তা পেয়ে বোমা বর্ষণ করতে শুরু করেন মিরাজ যুদ্ধবিমানের পাইলটরা।

অভিযান সম্পন্ন হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খবর দেন অজিত ডোভাল। তারপর দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়।

Bootstrap Image Preview