গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা অপসারণ বিষয়ে এক বিশেষ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
ডিএমপি বলেন, আমি ভিডিওটা দেখেছি। ওই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। ভিডিও দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, ওই দিন পিকআপের ওপরে যে সিলিন্ডারগুলো ছিল বিস্ফোরণটা প্রথমে ওখানেই হয়েছে। সেখান থেকে রেস্টুরেন্টে গিয়েছে। তারপর সরাসরি ওয়াহিদ ম্যানশনের দ্বিতীয়তলার বডি স্প্রের গোডাউনে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দাহ্য পদার্থ ছিল। এর কারণে আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, এখানে বিদ্যৎ বিভাগের লোক আছে। বিদ্যুতের তারগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমি বলবো আপনারা ইলেকট্রিক তারগুলো অপসারণ করে নতুন সংযোগ দিন।
তিনি আরও বলেন, এই এলাকা থেকে যেকোনো মূল্যে কেমিক্যাল কারখানা ও গোড়াউন অপসারণ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বলবো, আপনারা শুধু ব্যবসায়ী হিসেবে না, মানুষ হিসেবে কথা বলেন। দেশবাসীর সেন্টিমেন্ট বোঝার চেষ্টা করেন। আমরা চাই এই আবাসকি এলাকায় কোনো ধরণের দাহ্য পদার্থের গোড়াউন থাকবে না। এটা ব্যবসায়ীদের ভাবতে হবে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমি প্রথমত বলবো, সময় নির্ধারণ করে এগুলো সরিয়ে নিতে হবে। দ্বিতীয়ত বলবো, এর আগে নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেক সুপারিশ ছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। চকবাজারের ঘটনার ক্ষেত্রেও যেন এমনটা না হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে টাস্কফোর্স হচ্ছে আমরা সেখানে থাকবো। আমারা কাউকে ছাড় দেবো না, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখবো না। এ ধরনের জীবনহানি আর দেখতে চাই না। কেমিক্যাল কারখানা এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যা যা করা দরকার তাই করবো।
রাজউক চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘বিল্ডিং কোর্ড মেনে কোনও বিল্ডিং নির্মাণ হয় না। এখনই দেখার দরকার। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলো ভাঙার দরকার। এটা আবেগের কোনও বিষয় নয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো আমরা কেন ভেঙে দিচ্ছি না।’
এই সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান, রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুর রহমান, ওয়সার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন এ খান, তিতাস গ্যাসের এমডি মোস্তফা কামাল, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক সোহরাব আলী, বিস্ফোরক অধিদফতরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক শামসুল আলম, ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহম্মাদ ফেরদৌস খান, ডিপিসির এমডি বিকাশ দেওয়া প্রমুখ।