বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকা পড়েছেন অনেক বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক।আটকাপড়া পর্যটকদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
আজ মঙ্গলবারও টেকনাফ থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যেতে না পারায় এসব পর্যটক আটকে পড়েছেন। তবে সকালে সেন্টমার্টিন থেকে কিছু ছোট নৌকা টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এর আগে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
পর্যটকদের আটকা পড়ার তথ্য নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, দ্বীপে বেড়াতে এসে আড়াই হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন। তাদের বেশির ভাগেরই গতকাল সোমবার দ্বীপ থেকে টেকনাফে ফিরে যাবার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে কোনো জাহাজ দ্বীপে আসেনি। সকাল থেকে জেটিঘাটে জাহাজের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন অনেক পর্যটক। তাদের অনেকের অর্থে সংকট রয়েছে বলেও জানা গেছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের থেকে আটকাপড়া পর্যটকদের কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, হঠাৎ দমকা হওয়ার কারণে গতকাল থেকে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবার আশঙ্কা থাকায় সমুদ্রে সব ধরনের নৌযান চলাচল নিষেধ করা হয়েছে।
পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদের টেকনাফস্থ ব্যবস্থাপক শাহ আলম জানান, বৈরী আবহাওয়ায় টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সব পর্যটকবাহী জাহাজ নাফ নদ থেকে আবার টেকনাফ জেটিতে ফিরে আসে। এর আগে এসব জাহাজে করে দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া হাজারও পর্যটক সেখানে আটকা পড়েছেন। তাদের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া পর্যটক সাগর বলেন, পরিবার নিয়ে গত শনিবার সকালে জাহাজে করে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বেড়াতে এসেছি। সোমবার দ্বীপ ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে দ্বীপে কোনো জাহাজ না আসায় এখানে আটকা পড়েছি। দ্বীপে সবকিছুতে এখন অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সেকান্দর আলী জানান, সোমবার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া পর্যটকদের খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। তারা যেন হয়রানির শিকার না হন সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, সকালে পর্যটকবাহী ৭টি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়। হঠাৎ বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে নাফনদীর মাঝপথ থেকে জাহাজগুলোকে ঘাটে ফেরত আনা হয়েছে। কিন্তু এর আগে দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া আড়াই হাজারের মতো পর্যটক দ্বীপে আটকা পড়েছেন বলে জেনেছি। তারা যাতে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।